বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের (শেবাচিম) মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মাসুদ খানের ‘কমিশন বাণিজ্য’ বন্ধ ও তার শাস্তির দাবিতে জরুরি বিভাগের গেটে তালা ঝুলিয়ে কর্মবিরতি পালন করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
তবে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণার আড়াই ঘণ্টা পর কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। একই সঙ্গে দাবি আদায়ে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেন তারা।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে জরুরি বিভাগের গেট আটকে দিয়ে কর্মবিরতি শুরু করেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। এতে করে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ রোগী ও তাদের স্বজনরা।
রাত আড়াইটায় সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা হয়। রাত ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত হাসপাতাল পরিচালক ডা. বাকির হোসেন, উপপরিচালক আব্দুর রাজ্জাক ও কলেজ অধ্যক্ষ এসএম সরোয়ার ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠক শেষে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।
হাসপাতালের ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সজল পান্ডে ও সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলামের উপস্থিতিতে কর্মবিরতি শুরু করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
সজল পান্ডে জানান, মেডিসিন বিভাগের সহকারী রেজিস্ট্রার মাসুদ খান ইন্টার্ন চিকিৎসকদের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক থেকে কমিশন নিয়ে থাকেন। এর প্রতিবাদ করতে গেলে ইন্টার্নদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়।
সজল আরও অভিযোগ করেন, মাসুদ খান সিনিয়র চিকিৎসকদের কক্ষে তালা দেয়াসহ জুনিয়র চিকিৎসক ও কর্মচারীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ করে থাকেন। এ বিষয়টি হাসপাতাল পরিচালককে লিখিত দিলেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
২০ অক্টোবর রেজিস্ট্রার মাসুদ খানের ওপর হামলার অভিযোগ এনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানাভাবে ইন্টার্নদের হেয় করা হয়।
২১ অক্টোবর কারণ উল্লেখ না করে ডা. মাসুদ খান ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।
পরদিন ইন্টার্ন চিকিৎসকেরাও তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন হাসপাতালের পরিচালক বাকির হোসেনের কাছে।
এর প্রতিবাদে শুক্রবার রাত ১২টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতিতে যান ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
পরে হাসপাতালের পরিচালকসহ সিনিয়র চিকিৎসকরা এসে সমাধানের কথা জানালে কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে শুক্রবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত আল্টিমেটাম দেয়া হয়।
দাবি না মানলে কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেয়া হবে বলে জানান ইন্টার্ন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তরিকুল ইসলাম।
এ বিষয়ে রেজিস্ট্রার মাসুদ খানের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তার মুঠোফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এর আগে গত ২৩ অক্টোবর মাসুদ খান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তাকে মারধর করেছেন ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
ওই সময় কেন মারধর করা হয়েছে জানতে চাইলে কোনো কারণ জানাতে পারেননি তিনি।
হাসপাতাল পরিচালক ডা. বাকির হোসেন বলেন, ‘হাসপাতালের চলমান পরিস্থিতি সমাধানে সুষ্ঠু পদক্ষেপ নেয়া হবে এবং আমরা প্রশাসনের সাথে বিষয়টি নিয়ে বসব।’