নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের ঘটনায় ওই নারীর স্বামীর সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে ধারণা করছে জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি।
নির্যাতনে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে প্রশাসনের অবহেলা ছিল বলেও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মহিউদ্দিন শামীমের হাইকোর্ট বেঞ্চে জমা দেয়া হয়েছে প্রতিবেদনটি।
আদালত বৃহস্পতিবার প্রতিবেদনটি রেকর্ড করে ২৯ নভেম্বর এ বিষয়ক রুলের পরবর্তী শুনানির তারিখ দিয়েছে।
বেগমগঞ্জে এক নারীকে নির্যাতনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরে ৪ অক্টোবর। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয়ে সারা দেশে। রাজধানীসহ বিভিন্ন জায়গায় চলে টানা বিক্ষোভ।
ঘটনাটি ঘটে এরও এক মাস আগে। ভুক্তভোগীর স্বামী প্রায় এক যুগ আগে বিয়ে করে আলাদা সংসার পেতেছেন। ঘটনার দিন তিনি এলাকায় আসেন এবং রাতে বাড়িতে ঢুকে লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটায় স্থানীয় কয়েকজন।
বেগমগঞ্জ নির্যাতনের ঘটনায় করা ধর্ষণ মামলার আসামি দেলোয়ার হোসেন
ঘটনাটি নিয়ে তোলপাড় হওয়ার হওয়ার পর মামলা হয়, গ্রেফতার হন সব আসামি।
গত ৫ অক্টোবর এক আইনজীবী ঘটনাটি হাইকোর্টের নজরে আনলে একটি তদন্ত কমিটি করে দেয় আদালত।
আদেশের পর নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা ও চৌমুহনী সরকারি এস এ কলেজের অধ্যক্ষসহ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
সেই কমিটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দিয়েছে হাইকোর্টে।
আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনে নির্যাতনের ঘটনায় ওই নারীর স্বামীর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। এছাড়া এলাকার চৌকিদার, মেম্বার, চেয়ারম্যান, ওসি এবং এএসপির বিরুদ্ধে দায়িত্বে অবহেলার তথ্য পাওয়া গেছে। ’
দায়িত্বে অবহেলায় প্রমাণ পাওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সুপারিশ করেছে তদন্ত কমিটি।
স্বামীর সম্পৃক্ততা কী- এমন প্রশ্নে এই আইনজীবী বলেন, ঘটনার পর স্বামী বিষয়টি কাউকে না জানিয়ে চেপে যান। এতে তদন্ত কমিটির মনে হয়েছে তার সম্পৃক্ততা রয়েছে।
প্রতিবেদনের জন্য তদন্ত কমিটিকে ধন্যবাদ জানায় হাইকোর্ট।
আদালতে উপস্থিত ছিলেন ঘটনাটি নজরে আনা আইনজীবী জেড আই খান পান্না ও আব্দুল্লাহ আল মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী।
হাইকোর্ট ওই ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যম থেকে সরিয়ে দিয়ে বিটিআরসির কাছে প্রতিবেদন চেয়েছিল।
শুনানিতে বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব।