বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটে পর্দা করার কঠোর নির্দেশ

  •    
  • ২৯ অক্টোবর, ২০২০ ১৫:৪০

২৮ অক্টোবর জারি করা আদেশে বলা হয়েছে, ‘অত্র ইনস্টিটিউটের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, অফিস চলাকালীন সময়ে মোবাইল সাইলেন্ট/বন্ধ রাখা এবং মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য পুরুষ টাকনুর উপরে এবং মহিলা হিজাবসহ টাকনুর নিচে কাপড় পরিধান করা আবশ্যক এবং পর্দা মানিয়া চলার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

কার্যালয়ে মুসলিম কর্মীদের জন্য পোশাক নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক আব্দুর রহিম। 

অফিস আদেশে পুরুষদেরকে গোড়ালির নিচে আর নারীদেরকে হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

বাংলাদেশে কখনও কোনো সরকারি অফিসে এই ধরনের পোশাকের বাধ্যবাধকতা এর আগে আরোপ হয়নি।

অফিস আদেশটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হচ্ছে। এটি জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালকের এখতিয়ারভুক্ত কি না, বা তার অগ্রাধিকারে এই বিষয়টি পড়ে কি না এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।

২৮ অক্টোবর জারি করা আদেশে বলা হয়েছে, ‘অত্র ইনস্টিটিউটের সকল কর্মকর্তা কর্মচারীদের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, অফিস চলাকালীন সময়ে মোবাইল সাইলেন্ট/বন্ধ রাখা এবং মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের জন্য পুরুষ টাকনুর উপরে এবং মহিলা হিজাবসহ টাকনুর নিচে কাপড় পরিধান করা আবশ্যক এবং পর্দা মানিয়া চলার জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

অফিসে পর্দা করার নির্দেশ দিয়ে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালকের অফিস আদেশ

 

অবশ্য এই নির্দেশ না মানলে কী করা হবে, সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।

এমন নির্দেশনা কেন জারি করা হলো, জানতে চাইলে আব্দুর রহিম বলেন, ‘যেহেতু এটা মুসলিম রাষ্ট্র, সে ক্ষেত্রে মুসলিম হিসেবে আমাদের ধর্মীয় অনুশাসন মানতে হয়।’

তিনি বলেন, ‘টাকনুর উপরে যদি পুরুষ কাপড় পরে তাহলে তার কোনো গুনাহ নাই, টাকনুর নিচে পরলে সে কবিরা গুনাহ করল। একইভাবে নারীদের জন্যও সেটা প্রযোজ্য, নারীরা পর্দার ভেতরেই সুন্দর। টাকনুর নিচে কাপড় পরলে তার কবিরা গুনাহ হবে না। এই জিনিসটা আমাদের দেশে উঠে গেছে।’

সরকারি চাকরি আইন-২০১৮ এ কর্মচারীদের পোশাক কী হবে, সে বিষয়ে কিছু বলা নেই।

যদিও ২০১০ সালের ২৫ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক পরিপত্রে বলা হয়, কাউকে ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য করা যাবে না।

এতে বলা হয়, কাউকে ধর্মীয় পোশাক পরতে বাধ্য করা হলে তা অসদাচরণ বলে গণ্য হবে। এবং কেউ এটি করলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

তাহলে আপনি কেন পোশাক নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন- এমন প্রশ্নে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক বলেন, ‘ধর্মীয় অনুভূতি থেকে আমি আদেশ দিয়েছি। এটা সম্পূর্ণ আমার দায়িত্বে আদেশ দিয়েছি।’

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা না বলে একক সিদ্ধান্তে এই নির্দেশনা জারির কথাও বলেছেন তিনি। বলেছেন, ‘এটা আরও আগে থেকে আমার চালু করা উচিত ছিল। আমি বরং অনেক পরে করেছি।’

কে কী পোশাক পরবে, এটা আপনি ঠিক করে দিতে পারেন কি না, বা এটা কি আপনার দায়িত্ব?- এমন প্রশ্নে আব্দুর রহিম বলেন, ‘এটা আমি দিতে পারি কি না, এই প্রশ্ন করার আগে আমি আমার ধর্মীয় দায়িত্বের কথা ভেবেছি।’

‘আমাদের দেশ মুসলিম কান্ট্রি, আমাদের দেশে, আমার অফিসে যদি এভাবে সজ্জিত হয় আমার কাছে ভালো লাগবে’-বলেন পরিচালক।

যদি কেউ না মানে তাহলে আপনি কী ব্যবস্থা নেবেন?- এমন প্রশ্নে পরিচালক বলেন, ‘এটা ধর্মীয় ব্যাপার। কাউকে জোর করা হবে না। কেউ মানলে মানতে পারে, না মানলে নাই।’

‘তবে সবাইকে পরিচালনা ঠিকমতো করতে পারছি না, এটা আমার দায়িত্বে অবহেলার নজির বলে মনে করছি। আমি একজন বিসিএস কর্মকর্তা। আমি আমার অফিস চালাব আমার স্টাইলে।'

এটা নির্দেশনা দেয়ার কী আছে, এমনিতে বললেই তো হতো- এমন মন্তব্যের জবাবে পরিচালক বলেন, ‘আমি আমার ঊর্ধ্বতন জায়গা থেকে এই নির্দেশনা দিয়েছি।’

আব্দুর রহিম গত ২৬ মার্চ জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবে যোগ দেন। এর আগে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ছিলেন।

এ বিভাগের আরো খবর