ইউরোপে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে সতর্ক করেছেন প্রথানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বলেছেন, সেখানে ধাক্কা লাগলে বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়বে।
বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এ কথা বলেন সরকার প্রধানমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন শেখ হাসিনা।
বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ সম্প্রতি কমে আসলেও শেখ হাসিনা বেশ কিছু দিন ধরেই শীতে করোনার ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ এর বিষয়ে সতর্ক করে আসছেন। এরই মধ্যে ইউরোপে এই ‘দ্বিতীয় ঢেউ’ আঘাত হেনেছে।
যুক্তরাজ্যে প্রতিদিন এক লাখ করে নতুন রোগী সংক্রমণ হচ্ছে। জার্মানিতেও প্রথম দফার তুলনায় দ্বিতীয় দফায় সংক্রমণ বেশি হচ্ছে। এ কারণে এই দেশটি, পাশাপাশি ফ্রান্স দ্বিতীয় দফায় লকডাউন দিয়েছে।
করোনা দ্বিতীয় ধাক্কার বিষয়ে সর্তক করে দেশবাসীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আবার নতুনভাবে এর প্রাদুর্ভাব দেখা গেছে ইউরোপে, ব্যাপকভাবে। এবং ইউরোপে যখন আসে এর ধাক্কাটা আমাদের দেশেও আসে।’
বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের প্রধান বাজার ইউরোপ। সেখানে করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়ার পর গত এপ্রিল-মে মাসে পোশাক রপ্তানি তলানিতে নেমে এসেছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন থেকে প্রস্তুত, আমরা এখন থেকেই তৈরি হচ্ছি। বিভিন্নভাবে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি। প্রত্যেকটা জেলা হাসপাতালকে আমরা প্রস্তুত রাখছি। দুই হাজার ডাক্তার, ছয় হাজার নার্স-টেকনিশিয়ান নিয়োগসহ সকল পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।’
বক্তব্যের আগে পুরষ্কারপ্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেয়া হয়। প্রধানমন্ত্রীর হয়ে এই পদক তুলে দেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য জন্য এ বছর দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় বেসামরিক পুরস্কার পেয়েছেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দাস্তগীর গাজী, প্রয়াত কমান্ডার (অব.) আবদুর রউফ, প্রয়াত মুহম্মদ আনোয়ার পাশা ও আজিজুর রহমান।
চিকিৎসাবিদ্যায় পুরস্কৃত করা হয়েছে অধ্যাপক ডা. মো. উবায়দুল কবীর চৌধুরী ও অধ্যাপক ডা. এ. কে. এম. এ মুকতাদির।
সংস্কৃতিতে পদক দেয়া হয়েছে কালীপদ দাস ও ফেরদৌসী মজুমদারকে।
শিক্ষা ক্ষেত্রে অবদানের জন্য টাঙ্গাইলের মির্জাপুরের ভারতেশ্বরী হোমস পেয়েছে পুরস্কার।
১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর সরকার এ পুরস্কার দিয়ে আসছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গুণীজনদের সম্মান করা আমাদের কর্তব্য। যেভাবেই হোক তাদের পুরষ্কার হাতে তুলে দেবার জন্যেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের হাতে পদক তুলে দিতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন শেখ হাসিনা।
প্রতিবছর ২৫ মার্চ স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদানের অনুষ্ঠান হয়। তবে এ বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে সকল ধরনের জাতীয় অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অনুষ্ঠানও সীমিত করে ভার্চুয়ালি করা হয়।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন মন্ত্রী পরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।