চলতি বছরের মার্চ থেকে বন্ধ রয়েছে খাগড়াছড়ির লক্ষ্মীছড়ি উপজেলায় নির্মাণাধীন ছয়টি সেতুর কাজ। ফলে মানুষের যাতায়াত ও পণ্য পরিবহনে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জেলা সদর ও চট্টগ্রাম শহরের সঙ্গে এ উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম লক্ষ্মীছড়ি-মানিকছড়ি সড়ক। ১৪ কিলোমিটারের এ সড়কে ছয়টি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালে। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিলে চলতি বছরের মার্চে কাজ বন্ধ করা হয়।
নির্মাণাধীন সেতুগুলোর পাশে অস্থায়ী বেইলি সেতু ও সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছিল। সেগুলোও এতদিনে নড়বড়ে ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে গেছে। তাই এ সড়কে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সেতুগুলো নির্মাণ করছে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ। কার্যাদেশ পেয়েছে কুমিল্লার রানা বিল্ডার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৬২ কোটি টাকা।
আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যে সেতুগুলো নির্মাণ কাজ শেষ করার কথা। তবে কাজ হয়েছে সামান্যই।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এ সড়কে ট্রাক চলাচল না করায় উপজেলায় উৎপাদিত ফসল জেলা সদর কিংবা পাশের মানিকছড়ি উপজেলা বা চট্টগ্রামে পাঠানো ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে। নির্মাণ সামগ্রীসহ নানা পণ্য আনা-নেয়ায় সমস্যা হচ্ছে।
তারা জানান, সড়কে হালকা যানবাহন চলাচল করে। এসব যানে জেলা সদরে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে স্থানীয়দের। এর সঙ্গে আছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে লক্ষ্মীছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বাবুল চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, এ উপজেলার উন্নয়নে সরকারের উদ্যোগের কমতি নেই। কিন্তু এই সড়কের ছয়টি সেতুর নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছে। উপজেলার উন্নয়নও ব্যাহত হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি জেলা প্রশাসন ও সওজের সঙ্গে অনেকবার যোগাযোগ করেছি। ব্যক্তিগতভাবে কথাও বলেছি। এরপরও সেতুগুলোর কাজ আবার শুরু হচ্ছে না।’
সড়কটি খাগড়াছড়ি সওজ বিভাগের অধীন। সেতুগুলোর নির্মাণকাজ বন্ধ থাকার ব্যাপারে বিভাগের কোনো কর্মকর্তা আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু বলতে রাজি হননি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কর্মকর্তা জানান, চাঁদাবাজি ও অব্যাহত হুমকির কারণে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি সেতুগুলোর নির্মাণকাজ আবার শুরু করতে পারছে না। প্রতিষ্ঠানটি জেলার বাইরের। এ কারণে এখানে তাদের কোনো প্রতিনিধিকেও পাওয়া যাচ্ছে না। তারপরও সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা আশা করছেন, নির্ধারিত সময় ২০২১ সালের জুনের মধ্যেই সেতুগুলোর কাজ শেষ হবে।