বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ সিপাহি হামিদুর রহমানের ৪৯তম শাহাদত বার্ষিকী আজ ২৮ অক্টোবর। ১৯৭১ সালের এই দিনে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলার ধলাই সীমান্তে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন তিনি।
১৯৫৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন যশোর জেলার (বর্তমানে ঝিনাইদহ জেলা) মহেশপুর উপজেলার খোর্দ্দ খালিশপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন হামিদুর রহমান। তার নামে বর্তমানে এ গ্রামের নাম হামিদনগর।
হামিদুর রহমান শৈশবে খালিশপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পরে স্থানীয় নাইট স্কুলে লেখাপড়া করেন । ১৯৭০ সালে তিনি সেনাবাহিনীতে সিপাহী পদে যোগ দেন৷ সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়ার পরই প্রশিক্ষণের জন্য তাকে চট্টগ্রামের ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট সেন্টারে পাঠানো হয়৷ মহান মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে হামিদুর রহমান তাতে যোগ দেন।
মৌলভীবাজার জেলার ধলাইতে ছিল পাকিস্তানি বাহিনীর শক্ত ঘাঁটি। ২৮ অক্টোবর সেই ঘাঁটি আক্রমণ করেন মুক্তিযোদ্ধারা। শুরু হয় তুমুল যুদ্ধ। মেশিনগান পোষ্ট ধ্বংসের দায়িত্ব পড়ে হামিদুর রহমানের ওপর। তিনি ধ্বংস করেন মেশিনগান পোষ্ট। মুক্তিযোদ্ধাদের দখলে আসে ঘাঁটি। এরপরই পাকিস্তানি সেনাদের গুলিতে তিনি শাহাদত বরণ করেন। তখন সহযোদ্ধারা তার মরদেহ ভারতে নিয়ে ত্রিপুরার আমবাশা এলাকায় সমাহিত করেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অবদানের জন্য হামিদুর রহমানকে বীরশ্রেষ্ঠ খেতাব দেয়। ২০০৭ সালে এ বীরের দেহাবশেষ ভারত থেকে দেশে ফিরিয়ে এনে ঢাকার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে পুনরায় সমাহিত করা হয়।
হামিদুর রহমানের নামে মহেশপুরের খালিশপুরে সরকারি কলেজ, লাইব্রেরি, জাদুঘর, প্রাথমিক বিদ্যালয় ও সড়ক প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।