নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট ওয়াসিফ আহমেদ খানকে মারধর ও হত্যাচেষ্টার মামলায় কারাবন্দি সাংসদ হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম ও তার দেহরক্ষী জাহিদুল ইসলাম জাহিদকে তিন দিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।
বুধবার দুপুরে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের বিচারক আসাদুজ্জামান নূর তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দেন।
এর আগে সকাল ১০টার দিকে প্রিজন ভ্যানে করে কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিএমএম) আদালতে নেয়া হয় দুজনকে। দুপুর সোয়া ১২টার পর তাদের শুনানি শুরু হয়।
ইরফান সেলিমের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী প্রাণনাথ শিকদার, খুরশীদ আলম ও মাহবুব হাসান। জাহিদের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন মিজানুর রহমান।
মঙ্গলবার রাতে অবৈধ অস্ত্র ও মাদক রাখার অভিযোগে চকবাজার থানায় দুটি করে মোট চারটি মামলা করা হয় ইরফান ও জাহিদের বিরুদ্ধে।
সোমবার মারধর ও প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগে ইরফান ও জাহিদসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে ধানমন্ডি থানায় মামলা করেন নৌবাহিনীর লেফট্যানেন্ট ওয়াসিফ আহমদ খান। অজ্ঞাতপরিচয় আরও দুই-তিন জনকে আসামি করা হয় এই মামলায়।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে কলাবাগান সিগন্যাল সংলগ্ন এলাকায় নৌবাহিনীর কর্মকর্তা ওয়াসিফ মারধরের শিকার হন। অভিযোগ ওঠে হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম ও তার সঙ্গে থাকা লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছেন।
এ ঘটনায় প্রথমে ধানমন্ডি থানায় সাধারণ ডায়েরি ও পরদিন ইরফান সেলিমসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে হত্যাচেষ্টার মামলা করেন ওয়াসিফ।
ঘটনার ৩২ ঘণ্টার মধ্যে পুলিশ, র্যাব ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে।
রোববার সন্ধ্যায় ওই ঘটনার পর হাজী সেলিমের গাড়ি (ঢাকা মেট্রো ঘ ১১-৫৭৩৬) জব্দ করা হয় এবং রাতেই গাড়ির চালক মিজানুর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
মিজানুরকে সোমবার আদালতে হাজির করে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়। আদালত এক দিন মঞ্জুর করে।
সোমবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চকবাজারের দেবীদাস ঘাট লেনে হাজী সেলিমের বাড়িতে অভিযান চালায় র্যাব। সংস্থাটির গোয়েন্দা ইউনিট, র্যাব-৩ ও ১০ অভিযানে অংশ নেয়। সঙ্গে ছিলেন দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
অস্ত্র, মাদক, অবৈধ ওয়াকিটকিসহ ইরফান সেলিম ও তার সহযোগী জাহিদকে গ্রেফতার করে র্যাব। মাদক ও ওয়াকিটকি ব্যবহারের অপরাধে দুজনকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। সোমবার মধ্যরাতে তাদের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলায় আরেক আসামি এবি সিদ্দিক দিপুকে সোমবার রাত সাড়ে তিনটার দিকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। মঙ্গলবার তাকে তিন দিন হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।