বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

কিশোরদের কম সাজার সুযোগ নিচ্ছে ‘গডফাদাররা’

  •    
  • ২৭ অক্টোবর, ২০২০ ১৯:০৪

বরগুনার রিফাত হত্যা মামলায় অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে দেয়া রায়ে বিচারক কিশোর অপরাধের সাজা বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন। বলেছেন, সাজা কম হওয়ায় কিশোরদেরকে ব্যবহার করে ‘গডফাদাররা’।

সাজা কম হওয়ায় ‘গডফাদাররা’ কম বয়স্কদের ব্যবহার করে অপরাধ করে উল্লেখ করে কিশোরদের সাজা বাড়ানোর পরামর্শ এসেছে আদালত থেকে।

বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিষয়ে দেয়া রায়ে কিশোরদের জড়িয়ে পড়া নিয়ে উদ্বেগ জানিয়ে এই পরামর্শ দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার বরগুনার শিশু আদালতের বিচারক হাফিজুর রহমান তার রায়ের পর্যবেক্ষণে এই পরামর্শ দিয়েছেন।

কিশোরদের অপরাধে জড়িত হওয়া দেখে ‘আতঙ্কিত’ আদালত অভিভাবকদের ‘উদাসিনতাকেও’ দায়ী করেছে।

আদেশে ১৪ কিশোরের মধ্যে ছয় জনকে ১০ বছরের, চার জনকে পাঁচ বছরের এবং এক জনকে তিন বছরের সাজা দেয়া হয়েছে। তিন জনকে দেয়া হয়েছে খালাস।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর এই মামলার ১০ প্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করা হয়। যে ছয় জন খুনে জড়িত বলে প্রমাণ হয়েছিল, তাদের সবাইকে বিচারক মৃত্যুদণ্ড দেন। বাকি চার জনকে দেন খালাস।

 

তবে বয়স ১৮ এর কম হওয়ায় শিশু আদালতের বিচারক কাউকে যাবজ্জীবন আটকাদেশ দেননি।

সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের বেশিরভাগের বয়স ১৬ থেকে ১৭ এর মধ্যে।

২০১৯ সালের ২৬ জুন বরগুনায় প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয় রিফাত শরীফকে

 

শিশু কিশোর আইনের ৩৩ ধারা অনুযায়ী কোনো শিশু কিশোরকে যাবজ্জীবন বা মৃত্যুদণ্ড দেয়া যাবে না।

বিশেষ ক্ষেত্রে আরও কঠোর সাজা দেয়ার কথা বলা আছে। যদি সেই কিশোর ‘খুবই অবাধ্য, হিংস্র ও ভয়ঙ্কর হয়’ তাহলে সংশ্লিষ্ট আইনে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য যে শাস্তির কথা বলা আছে, তা কিশোরদেরও দেয়ার কথা বলা আছে।

যদিও এই বিশেষ ক্ষেত্রে শাস্তি একেবারেই বিরল।

রায়ে বরগুনার শিশু আদালতের বিচারক বলেন, ‘কিশোর অপরাধের দণ্ড লঘু, সে কারণে গডফাদাররা অপরাধ কর্মকাণ্ডে কিশোরদের ব্যবহার করছে। কিশোর অপরাধ নির্মূলের জন্য অপ্রাপ্তবয়স্ক আসামিদের শাস্তির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’

সারাদেশের কিশোর অপরাধের কয়েকটি উদাহরণও তুলে ধরা হয় রায়ে। বিচারক বলেন, ‘কিশোর গ্যাং বর্তমান বাংলাদেশের একটি গুরুতর সমস্যা। আমরা বিভিন্ন সময়ে কিশোরদের মারাত্মক সব অপরাধের জড়িয়ে যাওয়া দেখে রীতিমত আতঙ্কিত।’

অভিভাবকের ‘উদাসিনতা’ নিয়েও কথা বলেন বিচারক। বলেন, ‘এই কিশোর আসামিরা প্রাপ্তবয়স্ক দণ্ডিত আসামিদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে। পারিবারিক শিক্ষা, নৈতিক শিক্ষা ও মৌলিক শিক্ষার অভাবে এই কিশোররা বিপদগামী হয়েছেন।’

রায়ে বিচারক তুলে ধরেছেন রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নির প্রসঙ্গও।

বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচার হয়েছে রিফাত হত্যা মামলার 

 

এই হত্যার ভিডিওতে দেখা যায়, মিন্নি তার স্বামীকে বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। তবে পুলিশের তদন্তে বের হয়ে আসে প্রধান সন্দেহভাজন ‘নয়ন বন্ড’ হিসেবে পরিচিত সাব্বির আহমেদ নয়নের সঙ্গে বসে এই হত্যার পরিকল্পনা করেছেন মিন্নি নিজেই।

আদালতে সে অভিযোগ প্রমাণ হওয়ার পর মিন্নিরও ফাঁসির আদেশ হয়েছে। বিচারক বলেন, ‘এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত মিন্নির অনৈতিক ও বেপরোয়া জীবনযাপনের কারণে রিফাত হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে।’

 

রায়ের পর্যবেক্ষণের প্রতিক্রিয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বরগুনার পাবলিক প্রসিকিউটর স্তাফিজুর রহমান বাবুল বলেন, ‘আদালত যে মন্তব্য করেছে, তার সঙ্গে আমিও একমত। কারণ কিশোর অপরাধীদের শাস্তি বৃদ্ধি করা না হলে এদের অপরাধের পরিমাণ দিন দিন বৃদ্ধি পাবে।’

গত বছরের ১৬ জুন বরগুনায় দিনে দুপুরে শত শত মানুষের সামনে রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যা করে একদল কিশোর-তরুণ।

এই মামলায় পুলিশ ২৪ জনের নামে প্রতিবেদন জমা দেয় পুলিশ, যাদের মধ্যে ১৪ জনই অপ্রাপ্তবয়স্ক কিশোর।

এ বিভাগের আরো খবর