ফটকের বাইরে থাকা দুই বোন মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশ্বেরা মোস্তফাকে বাড়িতে প্রবেশ ও তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে রাজধানীর গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
তারা সঙ্গীত তারকা ফেরদৌস ওয়াহিদের ভাই পাইলট মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদের মেয়ে।
বাড়িতে ঢুকতে পারছে না দুই বোন- গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর তা আমলে নিয়ে সোমবার ছুটির দিন সন্ধ্যার পর কোর্ট বসিয়ে এ আদেশ দিয়েছেন বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
আদেশের বিষয়টি নিউজবাংলাকে নিশ্চিত করেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।
তিনি জানান, আদালত আদেশে অনতিবিলম্বে দুই বোন মুশফিকা মোস্তফা ও মোবাশ্বেরা মোস্তফাকে তাদের গুলশান-২ এর ৯৫ নম্বর রোডের ৪ নম্বর হোল্ডিং এর বাড়িতে পুলিশের প্রহরায় প্রবেশের ব্যবস্থা করতে বলেছে। আগামী ১ নভেম্বর পর্যন্ত ওই বাড়িতে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতেও বলা হয়েছে আদেশে।
একই সঙ্গে দুই বোন, বাড়ির দখলে থাকা অঞ্জু কাপুরকে আগামী ১ নভেম্বর আদালতে হাজির করাতে গুলশান থানার ওসিকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। আদেশ প্রতিপালনের বিষয়ে লিখিত প্রতিবেদন দিতেও বলা হয়েছে ১ নভেম্বর।
আদালতের আদেশ টেলিফোনে থানার ওসিকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান সুপ্রিমকোর্টের বিশেষ কর্মকর্তা সাইফুর রহমান।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, গুলশান-২ এর ৯৫ নম্বর সড়কে ৪ নম্বর হোল্ডিংয়ের বাড়ির মালিক মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ। গত ১০ অক্টোবর তিনি মারা যান। মোস্তফা জগলুল ওয়াহিদ পাইলট ছিলেন। তার দুই মেয়ে মুশফিকা ও মোবাশ্বেরা কয়েকদিন ধরে তাদের বাড়িতে প্রবেশ করতে পারছে না বিধায় ফটকের সামনে অবস্থান করছেন। তাদের অভিযোগ, বাড়ির দখল থাকা তাদের বাবার দ্বিতীয় স্ত্রী দাবিদার আঞ্জু কাপুর তাদেরকে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না।
বড় বোন মুশফিকা বলেন, ১৯৮৪ সালে তার বাবা গুলশানের এই বাসায়ই মাকে নিয়ে সংসার পেতেছিলেন। তাদের জন্ম ও শৈশবের বড় অংশও এই বাড়িতে কেটেছে। ২০০৫ সালে তাদের বাবা-মার বিচ্ছেদ হয়। পরে তারা কখনো মায়ের সঙ্গে, কখনো বাবার সঙ্গে থাকতেন।
২০১৩ সালে তিনি উচ্চতর লেখাপড়ার জন্য দেশ ছাড়েন। পরবর্তী ছয় বছর তিনি এই বাসায় অনিয়মিত হয়ে পড়েন। ছোট বোন মোবাশ্বেরাও বিয়ের পর যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান।
তবে তারা বাবার খোঁজখবর রাখতেন। তাদের বাবা বলেছিলেন, আঞ্জু কাপুর নামের এক সেবিকা তাকে দেখাশোনা করছেন। পরে আঞ্জু নিজেকে তাদের বাবার স্ত্রী দাবি করেন। তিনি একাই এখন এই বাড়ির ভোগদখল করছেন।
ভাতিজিদের এই অবস্থার বিষয়ে ফেরদৌস ওয়াহিদ গণমাধ্যমকে বলেছেন, বিষয়টি যেহেতু আইনি লড়াইয়ে গড়িয়েছে, তাই আদালতেই ফয়সালা হবে।