সংসদ সদস্য হাজী মোহাম্মদ সেলিমের ছেলে ইরফান মোহাম্মদ সেলিমের ঘর থেকে যেসব ব্রিফকেস, ওয়াকিটকি পাওয়া গেছে সেগুলো সাধারণ মানুষ বা বেসরকারি সংস্থার ব্যবহারের সুযোগ নেই।
হাতকড়াসহ যে ব্রিফকেস পাওয়া গেছে, তা অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত বিশেষ বাহিনী ব্যবহার করে।
উদ্ধার হওয়া ৩৮টি ওয়াকিটকির ফ্রিকোয়েন্সি বেসরকারি পর্যায়ে অনুমোদিত ওয়াকিটকির দ্বিগুণ।
অভিযানে ঘর তল্লাশিতে থাকা র্যাব কর্মকর্তারা
র্যাব জানায়, সেলিমপুত্রের ১২ থেকে ১৩ সহযোগী আছে, যারা এলাকায় ভয়-ভীতি দেখাতেন। তারা নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ করতেন এসব ওয়াকিটকি দিয়ে। এগুলো আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ট্রেস করতে পারে না।
ওয়াকিটকিগুলোর একটির সঙ্গে অন্যটি যুক্ত রাখা হতো ভার্চুয়াল প্রাইভেট সার্ভার বা ভিপিএস দিয়ে। এগুলো ব্যবহারে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির কোনো অনুমোদন নেয়া হয়নি।
ওয়াকিটকিগুলোর ফ্রিকোয়েন্সি সাধারণ ওয়াকিটকির দ্বিগুণ
অবৈধভাবে ওয়াকিটকি ব্যবহার আর মদ পানের জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত সেলিমপুত্রকে ছয় মাস করে মোট এক বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে। বাড়িতে অবৈধ পিস্তল ও এয়ারগান রাখায় নিয়মিত মামলা হবে বলে জানিয়েছে র্যাব।
এই বাড়ির পাশের বাড়িতে একটি নির্যাতনকেন্দ্রের সন্ধানও পেয়েছে র্যাব।
সেলিমপুত্রের বাড়িতে যেসব সরঞ্জাম পাওয়া গেছে কোনোটিই স্থানীয় বাজারে পাওয়া যায় না। আর বিদেশ থেকে আমদানির সুযোগ নেই ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য। এগুলো কারা, কীভাবে এনেছে, সেটি নিয়ে তদন্তের কথা জানিয়েছে র্যাব।
অভিযানে থাকা র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম বলেন, এই ধরনের ওয়াকিটকি সাধারণত আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যবহার করে। এগুলো বাইরে ব্যবহারের সুযোগ নেই, কারণও নেই।
সারোয়ার বলেন, ‘সাধারণ ওয়াকিটকির ফ্রিকোয়েন্সি থাকে চার থেকে পাঁচ কিলোমিটার। কিন্তু রিপিটার ব্যবহার করে আট থেকে ১০ কিলোমিটার ফ্রিকোয়েন্সিতে তারা ব্যবহার করতেন।’
ওয়াকিটকিগুলো ভিপিএস দিয়ে যুক্ত থাকত
সারোয়ার আলম বলেন, ‘এগুলো কীভাবে তারা বিদেশ থেকে নিয়ে এসেছে, তা আমরা জানার চেষ্টা করছি। এ বিষয়ে তদন্ত করে বিস্তারিত জানা যাবে।’
জব্দ করা ব্রিফকেসটি এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত র্যাব খোলেনি, ফলে এর ভেতরে কী আছে, সেটা জানার সুযোগ হয়নি।
রোববার রাতে নৌবাহিনীর এক কর্মকর্তাকে রাস্তায় মারধরের ঘটনায় মামলার পর র্যাব সোমবার দুপুরে পুরান ঢাকার দেবীদাস লেনে হাজী সেলিমের বাড়ি বাসভবন ‘দাদা বাড়িতে’ অভিযান চালায়।
পিস্তল ছিল বিছানায় তোশকের নিচে
নয় তলা ভবনটির চতুর্থ তলায় ডুপ্লেক্স বানিয়ে থাকতেন হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিম।
সেখানে তার শয়নকক্ষে তোশকের নিচে পাওয়া যায় বিদেশি পিস্তল। পিস্তলটি গুলি ভরা অবস্থাতেই পাওয়া যায়। এর কোনো লাইসেন্স দেখাতে পারেননি ইরফান।
শয়নকক্ষে এই এয়ারগান পাওয়া যায়
ঘরে পাওয়া যায় একটি এয়ারগান।
ব্রিফকেস, ওয়াকিটকি, ভিপিএসগুলো ছিল টেবিলে।
বাড়ি থেকে অবৈধ মদ ও বিয়ারও উদ্ধার করা হয়েছে।