সাবেক ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম গাজীর সম্পত্তির লোভে তারই শ্বশুর আনোয়ার প্যাদা লোক ভাড়া করে তাকে হত্যা করান বলে জানিয়েছে পুলিশ।
পটুয়াখালীর কলাপাড়ার নাওয়াপাড়া গ্রামের বাড়ি থেকে গত ২২ অক্টোবর আমিনুল ইসলাম গাজীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ বলছে, দুই ভাড়াটিয়া খুনিকে গ্রেফতারের পর উন্মোচন হয়েছে হত্যারহস্য। হত্যার ৩৬ ঘণ্টা পর গ্রেফতার করা হয়েছে মূল পরিকল্পনাকারী আনোয়ার প্যাদাকে। তিনি পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন।
পটুয়াখালী পুলিশ সুপার কার্যালয়ে রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মইনুল হাসান এ কথা জানান।
এসপি বলেন, হত্যার ঘটনায় মৃতের স্ত্রী হাবিবা বেগম বাদী হয়ে কলাপাড়া থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার তদন্ত করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ বিল্লাল হোসেন।
এএসপি বিল্লাল হোসেন জানান, আমিনুল ইসলামের ফোনকলের সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ২৪ অক্টোবর বরগুনার হেউলিবুনিয়া গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে আমজেদ মিয়া ও আমতলী বাসস্ট্যান্ড থেকে তার সহযোগী নিজাম উদ্দিন ওরফে মিজানকে গ্রেফতার করা হয়।
তাদের তথ্যের ভিত্তিতে রোববার পটুয়াখালী শহরের ছোট চৌরাস্তা থেকে ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
যেভাবে হত্যা করা হয় আমিনুলকে
পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মইনুল জানান, পৈত্রিক সূত্রে অনেক জমি পান আমিনুল ইসলাম গাজী। এ ছাড়া শ্বশুর আনোয়ারের সঙ্গে যৌথভাবে কিছু জমি কেনেন তিনি।
নিজের ও যৌথভাবে কেনা সম্পত্তির কিছু অংশ পায়রা বন্দরের কাজে অধিগ্রহণ করেছে সরকার। এ বাবদ মেলে ‘বড় অঙ্কের টাকা’। এই টাকা নানা কৌশলে নিয়ে নেন শ্বশুর আনোয়ার হোসেন।
এ নিয়ে শ্বশুরের সঙ্গে আমিনুলের দূরত্ব তৈরি হয়। সৃষ্টি হয় পারিবারিক অশান্তি। এক পর্যায়ে স্ত্রী হাবিবা বেগম স্ত্রী তিন সন্তানকে নিয়ে ধানখালীতে বাবার বাড়ি চলে যান।
সাবেক ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম তার বড় মেয়েকে ব্যাংক হিসাবের নমিনি করেছিলেন। ব্যাংকের টাকা ও স্থাবর সম্পত্তি ভোগদখলের আশায় আমিনুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন শ্বশুর আনোয়ার। বিষয়টি তার আপন ভাইয়ের মেয়ে জামাই নিজামকে জানান।
নিজাম যোগাযোগ করে তার জেলপার্টনার বরগুনার আমজেদের সঙ্গে। দুই লাখ টাকা চুক্তিতে রাজি হন তারা। কিলিং মিশনে অংশ নিতে আমিনুলকে ফোন দিয়ে তার বাড়িতে যান নিজাম ও আমজেদ।
ঘরে ঢুকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সফট ড্রিংকসের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে খাওয়ানো হয় আমিনুলকে। পরে তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়।
পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতার আসামিদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।