বিমানবন্দরের রানওয়েতে পাখি তাড়ানোর একটি বন্দুক আছে বটে, কিন্তু সেটা দু মাস ধরে অকেজো। রাজশাহীর শাহ্ মখদুম বিমানবন্দরে নিরুপায় নিরাপত্তাকর্মীরা কখনও কখনও লাঠি দিয়ে রানওয়ে থেকে পাখি তাড়াচ্ছেন। এতে কাজ না হলে অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন বাজাচ্ছেন।
তবে এতে উড়োজাহাজের সঙ্গে পাখির আঘাতে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে। আসছে শীতে বিমানবন্দর রানওয়ে এলাকায় পাখির আনাগোনা বাড়লে এই ঝুঁকি আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিভাগের প্রধান আব্দুল মতিন বলেন, ‘আমাদের বার্ড শুটার নেই, বন্দুকও নষ্ট। একমাত্র দোনলা বন্দুকের একটি নল অনেক দিন ধরে অকেজো। একটা নল দিয়ে কাজ চালানো হচ্ছিল। মাস দুয়েক আগে সেটিও নষ্ট হয়ে গেছে। বন্দুকটি মেরামতের জন্য লোক এনেও কাজ হয়নি। এখন অ্যাম্বুলেন্সের সাইরেন বাজিয়েই কাজ চলছে। আনসার সদস্যরাই এ কাজ করছেন।’
এ বিমানবন্দর থেকে মূলত রাজশাহী-ঢাকা রুটে উড়োজাহাজ চলে। প্রতিদিন থাকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স, নভোএয়ার ও ইউএস বাংলার কমপক্ষে ছয়টি ফ্লাইট। বিমানবন্দরের আশপাশে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের গাছ ও ফসলি জমি। তাই প্রচুর পাখির আনাগোনা। এসব পাখির অবাধ বিচরণ বিমানবন্দরের রানওয়ে ও আশপাশে। ফলে বিমানবন্দর এলাকায় পাখি তাড়াতে হিমশিম নিরাপত্তা কর্মীরা।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তাকর্মী আবু বক্কর নিউজবাংলাকে বলেন, বন্দুকের অভাবে তারা লাঠি দিয়েও পাখি তাড়ান। তাতে কাজ না হলে অ্যাম্বুলেন্স।
বাংলাদেশ বিমান প্রশিক্ষণ একাডেমির পাইলট ফারহান চৌধুরী বলেন, ‘পাখির জন্য আমাদের প্রায়শ উড্ডয়নের আগে থেমে যেতে হয়। অনেক সময় অবতরণ না করে ঘুরতে হয়। পাখির সমস্যা দূর না হলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
তিনি বলেন, রাজশাহী বিমানবন্দরের রানওয়ের একপাশে ৫০-৬০টি বাজপাখি বসে থাকে। অন্য পাশে একটি লেক আছে। সেখানেও মাছের জন্য পাখি জড়ো হয়। পাখি তাড়াতে এখন অ্যাম্বুলেন্স দিয়ে সাইরেন বাজানো হচ্ছে। এটিও খুব বিপজ্জনক।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উড়োজাহাজ উড্ডয়ন ও অবতরণের সময় বড় পাখি আঘাত করলে দুর্ঘটনার ঝুঁকি থাকে। এজন্যে ব্যাপক নিরাপত্তা নিতে হয়।
রাজশাহী শাহ্ মখদুম বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক সেতাফুর রহমান বলেন, ‘আপাতত আনসার দিয়েই পাখি তাড়ানোর কাজ চলছে। বন্দুক কেনার জন্য আমরা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’