হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মহাঅষ্টমীর অন্যতম আকর্ষণ কুমারি পূজা। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে জনসমাগম এড়াতে রাজধানী ঢাকার কোনো মন্দিরেই এ পূজার আয়োজন করা হয়নি।
বৃহস্পতিবার মহাষষ্ঠীতে দেবীর আগমনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দুর্গাপূজা। সোমবার বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের পূজা।
দুর্গাপূজার এ উৎসবে প্রতি বছরই থাকে নানা আয়োজন। তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মানতে গিয়ে নিয়মেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে এবারের পূজা।
ভক্তদের ঘরে বসেই অঞ্জলি দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ। এমন পরিস্থিতিতে মহাষষ্ঠী থেকে প্রত্যেক দিনই বিভিন্ন গণমাধ্যম পূজার অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করছে।
রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরীর এক মণ্ডপে মহাঅষ্টমীর পূজায় পূজারী ও দর্শনাথীরা। ছবি: নিউজবাংলা
পূজার তৃতীয় দিন শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন মণ্ডপে সকাল থেকেই অষ্ঠমী পূজার অঞ্জলি নিয়ে ভক্তদের আনাগনা দেখা গেছে। তবে অন্য বারের মতো খুব বেশি ভিড় ও আনুষ্ঠানিকতা ছিল না। করোনার কারণে পূজা ও অঞ্জলি দিয়েই মন্দির থেকে ফিরে যেতে হয়েছে ভক্তদের।
সিদ্ধেশ্বরী কালি মন্দিরে শনিবার সকাল ৭টায় শুরু হয় মহাঅষ্টমীর পূজা। পূজা শেষে অঞ্জলি দেন ভক্তরা। বেলা পৌনে ১২টায় করোনা মুক্তি, দেশ-জাতি ও বিশ্ব শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা হয় সেখানে। একই সময়ে একই অনুষ্ঠান ছিল রাজধানীর অন্যান্য মন্দিরেও।
সিদ্ধেশ্বরী কালি মন্দির পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সরকার নির্ধারিত স্বাস্থ্যবিধি মেনে আমাদের এখানে পূজা করা হচ্ছে। জনসমাগম যেন না হয় সেজন্য কুমারি পূজা করা হয়নি। ভক্তদের সবাইকে মাস্ক, স্যানিটাইজার সরবরাহ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘প্রতিদিনের মতো করোনা মুক্তির জন্য পূজা শেষে দেবীর কাছে বিশেষ প্রার্থনা করেছি আমরা।’
সিদ্ধেশ্বরী কালি মন্দির পূজা কমিটির সভাপতি জানান, করোনার জন্য মানুষের মধ্যেও একটা ভয় কাজ করছে। তাই এবার লোক সমাগম অন্যবারের তুলনায় অনেক কম। সন্ধ্যায়ও তেমন আনুষ্ঠানিকতা না থাকায় ভক্ত সমাগম কম হতে পারে। তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রসাদ বিতরণের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পুরান ঢাকার শাঁখারিবাজারের একটি মণ্ডপ। ছবি: পিয়াস বিশ্বাস
সুবিমল চন্দ্র সাহা নামে শান্তিনগরের এক বাসিন্দা স্ত্রী এবং দুই সন্তানকে নিয়ে সিদ্ধেশরী কালি মন্দিরে এসেছিলেন অঞ্জলি দিতে।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘করোনা মহামারির এ সময়েও পরিবারের সবাই সুস্থ আছে, একসঙ্গে মন্দিরে আসতে পারলাম। খুবই ভালো লাগছে। দেবীর প্রস্থানের সঙ্গেসঙ্গে যেন করোনা মহামারির অবসান হয়- দেবীর কাছে সেই প্রার্থনাই করলাম।’
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের তথ্য অনুসারে, এ বছর সারা দেশে ৩০ হাজার ২২৩টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা হচ্ছে। গত বছর পূজা হয় ৩১ হাজার ৩৯৮টি মণ্ডপে।