প্রায় সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা পাচারের অভিযোগ থাকা প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার দেশে ফিরছেন না।
দেশের মাটিতে পা রাখার সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতার করে হাইকোর্টের আদেশের পর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান তার আইনজীবী।
টাকা উদ্ধারে সহযোগিতা করতে ২৫ অক্টোবর নিরাপদে দেশে ফেরার আবেদন করেছিলেন হালদার। উচ্চ আদালতে আবেদনে বলেছিলেন, তিনি দেশে ফেরাকে নিরাপদ বোধ করছেন না। তবে তিনি আদালতের কাস্টডিতে থাকতে রাজি।
তবে ২১ অক্টোবর হাইকোর্ট হালদারকে দেশে আসার অনুমতি দিলেও ফেরার সঙ্গে সঙ্গে গ্রেফতারের নির্দেশ দেয়।
আদেশে বলা হয়, ‘পি কে হালদার যদি দেশে আসেন, তাহলে এই কোম্পানি মেটারটা নিষ্পত্তি করা যাবে। সেটা নিষ্পত্তি করার জন্য এই কোর্ট দেখতে চায় যে, তিনি বিমানযোগে দেশে পা ফেলা মাত্র তাকে যেন অ্যারেস্ট করা হয় এবং জেলে নেওয়া হয়। তাকে যেন বাইরে যেতে না দেওয়া হয়। এই কাজটা যদি করা হয়, তাহলে তার আবেদন অনুযায়ী তিনি যে মনে করছেন, তাকে কিডন্যাপ করা হবে, তা আর হবে না।”
- আরও পড়ুন: দেশে ফিরলেই গ্রেফতার পি কে হালদার
তিন দিনের মাথায় শনিবার পি কে হালদারের সাবেক কর্মস্থল ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিস লিমিটেড-আইএলএফএসএল এর আইনজীবী মেইল করেন অ্যাটর্নি জেনারেল ও দুর্নীতি দমন কমিশনকে জানান, দেশে ফিরছেন না পি কে।
পি কের ২৫ অক্টোবর সকাল আটটার দিকে দেশে ফেরার কথা ছিল। তার ফেরার টিকিটের অনুলিপিও হাইকোর্টে জমা দেয়া হয়েছিল।
এই ই মেইলে দেশে না ফেরার কথা জানিয়েছেন প্রশান্ত কুমার হালদার
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘পিকে হালদার দেশে ফিরছেন না জানিয়ে তার আইনজীবীকে মেইল করে করেছেন। সেটি আইনজীবী মাহফুজুর রহমান মিলন আমাকে জানিয়েছেন।’
দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, পি কে হালদারের না ফেরার পেছনে শারীরিক অসুস্থতা ও কোভিড এর কারণ দেখানো হয়েছে।
বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন পি কে হালদার।
গত ৭ সেপ্টেম্বর পিকে হালদারের দেশে ফেরার বিষয়ে একটি আবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়েছিল।
ওই আবেদনে বলা হয়েছিল, দেশে ফিরে পিকে হালদার ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিনিয়োগকারীদের যে টাকা নিয়ে গেছেন তা উদ্ধার করতে দেশে ফিরতে চান। এজন্য দুদক বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেপ্তার এড়াতে থাকতে চান আদালতের কাস্টডিতে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রিলায়েন্স ফিন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকা অবস্থায় আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন পিকে হালদার।
এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে থাকা ৮৩ জনের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে কৌশলে সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি ও তার সহযোগীরা।
এর মধ্যে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকেই ১৫শ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে পিকে হালদারের বিরুদ্ধে।
চলতি বছরের শুরুতে পি কে হালদার বিদেশে পালিয়ে যান বলে তথ্য পাওয়া যায়। এরপর তার পাসপোর্ট, সম্পত্তি জব্দ করা হয়। আইএলএফএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে অপসারণও করা হয়।