বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের প্রয়াণ

  •    
  • ২৪ অক্টোবর, ২০২০ ০৮:৫৯

শনিবার সকাল সাড়ে আটটায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন আদ দ্বীন হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা তবিবুর রহমান আকাশ।

দেশের দুই নেত্রীর আইনজীবী হিসেবে পরিচিত সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের মৃত্যু হয়েছে। তার বয়স হয়েছিল ৮৫ বছর।

শনিবার সকাল সাড়ে আটটায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছেন আদ-দ্বীন হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা তবিবুর রহমান আকাশ।

আকাশের বরাত দিয়ে হাসপাতালের মহাপরিচালক ডা. নাহিদ ইয়াসমিন নিউজবাংলাকে বিষয়টি জানিয়েছেন।

এর আগে ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রফিক-উল হককে লাইফ সাপোর্ট নেয়া হয়েছিল।

বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন রফিক-উল হক। গত ১৫ অক্টোবর তাকে মগবাজারের আদ-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, তার করোনা পরীক্ষায় রিপোর্ট নেগেটিভ এলেও অবস্থার খুব উন্নতি হচ্ছিল না। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে লাইফ সাপোর্টে নেয়া হয়।

বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কারণে রফিক-উল হক দীর্ঘদিন বাসাতেই ছিলেন।

শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় আদ-দ্বীন হাসপাতালে রফিক-উল হকের প্রথম জানাজা হবে। এরপর তাকে পল্টনে নিজ বাসায় নেয়া হবে।

জোহরের নামাজের পর বায়তুল মোকাররম মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা হবে। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে তৃতীয় জানাজা শেষে তাকে বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।

আলোচিত এ আইনজীবীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। তিনি বলেন, প্রথিতযশা এই আইনজীবী অত্যন্ত সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ও আইনি বিষয় নিয়ে তিনি আদালতকে সবসময় সহযোগিতা করেছেন। সর্বজনশ্রদ্ধেয় ও সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যারিস্টার রফিক-উল হক একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছিলেন। আইনের শাসন এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তার অবদান অনস্বীকার্য।’

প্রধান বিচারপতি মরহুমের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।

শোক প্রকাশ করেছেন অ্যাটর্নি জেনারেল ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিনও।

তিনি বলেন, ‘তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। তাকে শ্রদ্ধা জানাতে জানাজা সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনে করার ব্যবস্থা করা হবে।’

সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘তিনি ছিলেন আমার সিনিয়র। আমার বড় ভাই। আইন পেশায় যেকোনো প্রয়োজনে তিনি আমাকে সাহায্য করতেন।

‘কোনো বিষয় বুঝতে গেলে যত্ন সহকারে তিনি বুঝিয়ে দিতেন। তার মৃত্যুতে আমি চরমভাবে শোকাহত।’

বর্ণাঢ্য পেশাজীবন ছিল ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের। সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আইনি সহায়তা দিতে এগিয়ে এসেছিলেন ব্যারিস্টার রফিক-উল। এ কারণে দুই নেত্রীর আইনজীবী হিসেবে খ্যাতি পেয়েছিলেন তিনি।

বিচারপ্রার্থীদের জন্য আইন অঙ্গনে যেমন তিনি লড়েছেন, তেমনি রাজনৈতিক অঙ্গনেও ছিল তার বিচরণ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান থেকে শুরু করে তার কন্যা শেখ হাসিনার সঙ্গে তিনি কাজ করেছেন। মাঝে জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও খালেদা জিয়ার সঙ্গেও কাজ করেছেন এ আইনজীবী।

দুই নেত্রীকে সংলাপে বসাতে মধ্যস্থতার চেষ্টা করেছেন জ্যেষ্ঠ এ আইনজ্ঞ।

হাসপাতালসহ বিভিন্ন দাতব্য সংস্থায় দান করেছেন তার সব অর্থ। বিনা পয়সায় দায়িত্ব পালন করেছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা হিসেবে।

ব্যারিস্টার রফিক-উল হকের জন্ম ১৯৩৫ সালে কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে। ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

১৯৫৮ সালে এলএলবি পাস করেন রফিক-উল। ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার এট ল’ সম্পন্ন করেন তিনি।

১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টে এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেন বিশিষ্ট এ নাগরিক।

১৯৯০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন রফিক-উল হক।

বাংলাদেশের পাশাপাশি ভারত, পাকিস্তান ও ব্রিটেনের নাগরিক হয়েছিলেন তিনি। সাবেক চার প্রধান বিচারপতি তার অধীনে চেম্বারে কাজ করেছেন।

সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক ও সাবেক স্পিকার ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকারও তার সঙ্গে কাজ করেছেন।

বিনা পয়সায় অনেকে মামলা লড়ে আলোচিত হয়েছিলেন রফিক-উল হক। স্পষ্ট ও সাবলীল আইনি যুক্তিতর্কের জন্য তার বিশেষ পরিচিতি ছিল।

এ বিভাগের আরো খবর