বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে অবিরাম বৃষ্টিতে বাগেরহাট জেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজার হাজার মানুষ। ভেসে গেছে চিংড়ি ঘের ও পুকুরের মাছ। তলিয়ে গেছে সবজি ও পানের বরজ।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা খালেদ কনক জানান, দুদিনের বৃষ্টিতে ভেসে গেছে সাত থেকে আট হাজার চিংড়ি ঘের ও পুকুরের মাছ।
শরণখোলার উত্তর কদমতলা গ্রামের চাষি মিজান গাজী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে মুই (আমি) তিন বিঘা গলদা ও বাগদার ঘের করছিলাম। মোর (আমার) সব কিছু ভাইসা গেছে। মুই এহন (এখন) পথে বইশ্যা (বসে) গেলাম। ঘের পারে লাউ, কুমড়া ও বেগুন চাষ হরছিলাম (করছিলাম), হ্যাও (তাও) গেছে পানির তলে।’
বৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলা কৃষি অধিদফতরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সঞ্জয় কুমার দাস। তিনি বলেন, জেলায় ১০ থেকে ১৫ হেক্টর জমির সবজি ও পান পানিতে তলিয়ে গেছে।
সদর উপজেলার কাড়াপাড়া ইউনিয়নের দেওয়ানভাটি গ্রামের পান চাষি হেমায়েত হাওলাদার বলেন, ‘আমার পানের বরজে পানি উঠে গেছে। রাতের মধ্যে পানি নেমে না গেলে পচন ধরে গাছ মরে যাবে।’
বাগেরহাটে জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে অনেক চিংড়ি ঘের। ছবি: নিউজবাংলা
টানা বৃষ্টিতে প্লাবিত বাগেরহাট সদর, মোড়েলগঞ্জ, শরণখোলা, রামপাল, মোংলা, চিতলমারী, ফকিরহাট উপজেলায় নিচু এলাকা। ফসল ও মাছের ঘের তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি এসব এলাকায় লবণ পানি ঢুকুছে বসতঘরেও। এতে বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা।
দেওয়ানভাটি গ্রামের রহিম মিয়া জানান, তার ঘরে পানি ঢোকায় চুলায় রান্না বসেনি। সারাদিন শুকনো খাবার খেয়েই কেটেছে তাদের।