ঢাকা-১৮ সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে দ্বন্দ্বে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসায় হামলা চালিয়েছিল দলের নেতাকর্মীরা। সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হওয়ায় দল থেকে ১২ জনকে বহিষ্কারও করে বিএনপি।
বিএনপি বলছে, বিনা চ্যালেঞ্জে আসনটি ছাড়তে নারাজ তারা। এরই মধ্যে এ আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলের একক প্রার্থীর সমর্থনে কাজ শুরু করেছেন বলেও জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান।
ঢাকা উত্তর সিটির ৪৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলী আকবর আলীর বাসায় বিএনপির নির্বাচনী ক্যাম্পে হামলার অভিযোগে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
গত ৯ জুলাই আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুনের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া ঢাকা-১৮ আসনে নির্বাচন হবে ১২ নভেম্বর। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ১ ও ১৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং দক্ষিণখান, খিলক্ষেত, তুরাগ, উত্তরা এবং উত্তরখান থানার এলাকা নিয়ে এ আসনটি গঠিত।
একই দিন সিরাজগঞ্জ-১ আসনেও উপনির্বাচন হবে।
এর আগে ঢাকা-১৮ আসনে যুবদলের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর হোসেনকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি। আসনটিতে মনোনয়ন চেয়েছিলেন বিএনপির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন আহমেদসহ নয় জন।
এ নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে গত ১১ অক্টোবর বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বাসায় হামলা চালায় দলটির নেতারা।
এসএম জাহাঙ্গীরের মনোনয়ন বাতিলের দাবিতে ওই দিন শতাধিক নেতাকর্মী উত্তরায় মির্জা ফখরুলের বাসার সামনে বিক্ষোভ করে। এক পর্যায়ে কিছু কর্মী বাসা লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ও ডিম ছোঁড়ে।
১২ সেপ্টেম্বর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এ আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার নেয়ার দিনও জাহাঙ্গীর ও কফিলের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল।
সংবাদ সম্মেলনে ওই আসনে বিএনপি নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে। বিনা চ্যালেঞ্জে ছেড়ে দেয়া হবে না।
তিনি দাবি করেন, এ আসনে দলের মনোনয়ন চেয়েছিলেন আরও আট জন। ইতোমধ্যে তারা দলীয় নেতৃত্বে এক হয়ে এসএম জাহাঙ্গীর হোসেনকে সমর্থন দিয়ে কাজ শুরু করেছেন। বিএনপি এখন আগের চেয়েও ঐক্যবদ্ধ।
সংবাদ সম্মেলনে দক্ষিণখান থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর আলীকে বাসায় ঢুকে মারধরের অভিযোগ করা হয়। এ ছাড়া বাসার মূল ফটক, দুটি ব্যক্তিগত গাড়ি, চারটি মোটর সাইকেল, ছয়টি স্ট্যান্ড ফ্যান, ১৫০টি চেয়ার ও ২০টি টেবিল ভাংচুরের অভিযোগ করা হয়।
এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করেন আমান।
এ বিষয়ে দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিকদার মো. শামীম হোসেন নিউজবাংলাকে বলেন, তার কাছে এমন কোনো হামলা বা ভাংচুরের তথ্য নেই।
এর আগে ঢাকা- ৫ ও নওগাঁ-৬ আসনে গত শনিবার উপনির্বাচনের পর বিএনপি প্রার্থীরা ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। সে সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ করেন তারা।