ফেসবুক প্রোফাইলে নারীর সুন্দর ছবি আর মোবাইল ফোনে কণ্ঠ পরিবর্তন করে কথোপকথন। এভাবেই টার্গেট করে ছেলেদের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলতেন সিলেটের মাসুক মিয়া।
পরবর্তী সময়ে হঠাৎ বিপদে পড়েছেন এমন খবর দিয়ে ফাঁদে পড়া ছেলের কাছ থেকে হাতিয়ে নিতেন হাজার হাজার টাকা।
প্রতারণার মাধ্যমে এভাবে ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর অবশেষে ধরা পড়েছেন মাসুক।
র্যাব-৪-এর একটি দল মঙ্গলবার নরসিংদীর মনোহরদী পৌরসভা বাজার থেকে তাকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা হয়েছে।
র্যাব-৪-এর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. সাজেদুল ইসলাম সজল জানান, সুন্দরী নারীর ছবি দিয়ে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে ছেলেদের ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাতেন মাসুক। তার বন্ধু হওয়ার আমন্ত্রণে সাড়া দিলে কথোপকথনের একপর্যায়ে মোবাইল নম্বর আদান-প্রদান করতেন। দীর্ঘসময় ধরে নারী কণ্ঠে কথোপকথনের পর গড়ে তুলতেন প্রেমের সম্পর্ক।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, একপর্যায়ে বন্ধুর সঙ্গে দেখা করার জন্য ঢাকার উদ্দেশে রওয়ানা হওয়ার কথা বলতেন মাসুক। পথে দুর্ঘটনা, কখনও হাসপাতালে ভর্তি বা অন্য কোনো গুরুতর সমস্যা তাৎক্ষণিক মিটমাট করার জন্য ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা প্রয়োজনের কথা জানাতেন।
তিনি আরও জানান, সরল বিশ্বাসে ও ভালোবাসার টানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত টাকা পাঠিয়ে দিতেন প্রেমিক। এরপরই যোগাযোগ বন্ধ করে দিতেন নারীর ছদ্মবেশ ধারণ করা মাসুক।
র্যাব কর্মকর্তা সজল বলেন, কখনো ভিডিও কলে কথা বলতেন না মাসুক। মেয়ে কণ্ঠে প্রবাসী নারী, পুলিশ কর্মকর্তা, মেয়ের মা, মেয়ের বোন সেজে নিপুণ অভিনয়ে প্রতারণা করে বিকাশের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন তিনি।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব-৪-এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক জানান, মাসুক মিয়া সর্বশেষ ‘Soniya Akter keya’ নামে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে প্রতারণা করছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় বা সম্পর্ক গড়ে তোলার আগে আরও সতর্ক থাকার আহ্বান জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।