বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সরকারি চালে পোকা এলো কীভাবে

  •    
  • ২২ অক্টোবর, ২০২০ ১০:২৯

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. শাহাবুদ্দিন আকন্দ জানিয়েছেন, কোথা থেকে কীভাবে বস্তাপচা চাল এলো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে জেলা খাদ্যবিভাগ। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।

বরগুনার বেতাগী উপজেলার খাদ্যগুদাম থেকে ১৭০ মেট্রিক টন চাল আনা হয়েছিল জেলা সদর উপজেলার খাদ্যগুদামে। কিন্ত বিতরণের জন্য এসব চালের বস্তা খুলতেই বের হয় খাবার অনুপযোগী নিম্নমানের পোকায় খাওয়া চাল।

বেতাগী খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের গুদামে এমন বাজে চাল ছিল না। পরিবহন ঠিকাদারও বলছেন, খাদ্যগুদাম থেকে যেমন বস্তা দেয়া হয়েছে, সেগুলোই তিনি নিয়ে এসেছেন।

সদর উপজেলার খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অবশ্য এসব চাল খারাপ মানতে নারাজ। তিনি দাবি করছেন, নিচের কিছু বস্তার চাল এমন; বাকিটা ভালো আছে।

তবে গুদামের শ্রমিকরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের বক্তব্য, ১৭০ মেট্রিক টনের সব চালেই এমন পোকা।

তাই সমীকরণ মিলছে না জেলা খাদ্যবিভাগের কর্তাদের। পোকা এলো কোথায় থেকে এমন প্রশ্নের সমাধানে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে তারা।

জেলা খাদ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, বরগুনা সদর খাদ্যগুদামে ভিজিডি, ভিজিএফ মৎস্য, জিআর ও খাদ্যবান্ধব খাতে বিতরণের জন্য আমন চালের সংকট দেখা দেয়। এমন পরিস্থিতিতে বেতাগী খাদ্যগুদাম থেকে ১৭০ মেট্রিক টন চাল আনার সিদ্ধান্ত নেয় জেলা খাদ্য বিভাগ। এসব চাল পরিবহনের জন্য ৫ অক্টোবর মেসার্স খোকন সমাদ্দার ও মেসার্স মনিন্দ্রনাথ সরকার নামে বরগুনার দুটি নৌ পরিবহন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক।

কার্যাদেশ অনুযায়ী ১৭ অক্টোবর চাল নৌপথে বরগুনায় পৌঁছায়। বরগুনা সদর খাদ্যগুদামে সেসব বস্তা রাখা হয়। কিন্ত বুধবার বিতরণের জন্য নামানোর সময় শ্রমিকরা পোকা খাওয়া নিম্নমানের চাল দেখতে পান। বস্তা খুললে দেখা যায়, সব চালেরই এই অবস্থা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গুদামের কয়েক জন শ্রমিক জানান, বেতাগী থেকে প্রায় সব বস্তার চালেরই এই অবস্থা। নিয়ম অনুযায়ী এসব চাল আলাদা রাখার কথা থাকলেও গুদামের খামালেই ওই বস্তা রাখা হয়।

ঠিকাদার খোকন সমাদ্দার বলেন, ‘বেতাগী খাদ্যগুদাম থেকে বস্তা মেপে চাল দেয়া হয়েছে। আমরা ওই চাল নৌপথে বরগুনায় পৌঁছে দিয়েছি। বস্তার ভেতরে চাল ভালো কি মন্দ এসব আমাদের দেখার কথা না বা দেখার বিষয়ও না।’

একই বক্তব্য আরেক ঠিকাদার মনিন্দ্রনাথ সরকারেরও।

বরগুনা সদর খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জলিল সিকদারের দাবি, ‘স্তূপের নিচে থাকায় কয়েক বস্তা চাল নষ্ট পাওয়া গেছে। ওই বস্তাগুলো আলাদা করে রাখা হয়েছে।’

কিন্ত বেতাগী খাদ্যগুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নজরুল ইসলামের জোর দাবি, তার গুদামে কখনোই পোকা খাওয়া বাজে চাল রাখা হয়নি। গুদাম থেকে ভালো চাল সরবরাহ করা হয়েছে।

তাহলে বস্তার চালে পোকা ঢুকলো কোথায় থেকে, তা নিয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে জেলা খাদ্য বিভাগ।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. শাহাবুদ্দিন আকন্দ জানিয়েছেন, কোথা থেকে কীভাবে বস্তাপচা চাল এলো বিষয়টি খতিয়ে দেখছে জেলা খাদ্যবিভাগ। ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করেছে।নাগরিকদের সংগঠন জেলা পাবলিক পলিসি ফোরামের আহ্বায়ক হাসান ঝন্টু বলেন, ‘বরগুনা জেলায় চাল নিয়ে চালাচালি করা একটি চক্র আছে। এই সংঘবদ্ধ চক্রটি অনেক বছর ধরে গুদাম থেকে চোরাই চাল কিনে বিক্রি করা থেকে শুরু করে গুদামের ধান চাল সরবরাহের নামে নানা কারসাজি করে আসছে। এর সাথে খোদ খাদ্য বিভাগের একটা যোগসাজশ আছে।’

এ বিভাগের আরো খবর