সাতক্ষীরার কলারোয়ায় শাহিনুল ইসলাম ও তার স্ত্রী-সন্তানদের হত্যার দায় স্বীকার করেছেন ছোটভাই রায়হানুল ইসলাম। পুলিশ জানায়, পারিবারিক বিরোধের জেরে চাপাতি দিয়ে তাদের খুন করা হয় বলে রায়হানুল রিমান্ডে স্বীকার করেছেন।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) খুলনা বিভাগীয় অতিরিক্ত উপ মহাপরিদর্শক শেখ ওমর ফারুক বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। সাতক্ষীরা সিআইডি কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।
শেখ ওমর ফারুক বলেন, '৩০ বছরের রায়হানুল বেকার ছিলেন। বড় ভাইয়ের বাড়ির পাশেই একটি ঘরে থাকতেন তিনি। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় খাবারের খোটা দিয়ে তাকে গালমন্দ করেন ভাবি সাবিনা খাতুন। তখনই তিনি ভাবিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এরপর রাতে টিভি দেখার সময় বিদ্যুৎ বিল বেশি হবে বলে তাকে বকা দেন বড় ভাই শাহিনুল। এ ঘটনায় রায়হানুল ভাইকেও হত্যার পরিকল্পনা করেন।'
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৪ অক্টোবর রাতে কোমল পানীয়ের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে ভাই ও ভাবিকে খাওয়ান রায়হানুল। এরপর রাতের শেষ ভাগে তিনি গাছ বেয়ে চিলেকোঠা দিয়ে ঘরে প্রবেশ করেন এবং ঘুমন্ত ভাই ও ভাবিকে চাপাতি দিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। এ সময় দম্পতির ছেলে সিয়াম ও মেয়ে তাসনিম জেগে গেলে তাদেরও হত্যা করেন রায়হানুল। পরে তিনি চাপাতি পুকুরে ফেলে গোসল করে ঘুমাতে যান।
তবে কাউকে জানানোর ভয় না থাকায় শাহিনুলের ৪ মাসের সন্তান মারিয়াকে হত্যা করা হয়নি বলে রিমান্ডে জানিয়েছেন রায়হানুল।
তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাড়ির পাশের পুকুর থেকে হত্যায় ব্যবহৃত চাপাতি উদ্ধারের কথা জানিয়েছে পুলিশ। ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার জন্য রায়হানুলকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে সাতক্ষীরা সিআইডির পুলিশ সুপার আনিচুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
১৪ অক্টোবর রাতে সাতক্ষীরার কলারোয়ার খলশি গ্রামে মাছ ব্যবসায়ী শাহিনুল ইসলাম, তার স্ত্রী সাবিনা খাতুন, ছেলে সিয়াম হোসেন ও মেয়ে তাসনিম সুলতানাকে গলা কেটে হত্যা করা হয়। পরদিন শাহিনুলের শ্বাশুড়ি ময়না খাতুন কলারোয়া থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় সিআইডিকে। ১৫ অক্টোবর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় রায়হানুলকে। পরের দিন তাকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। ১৮ অক্টোবর রায়হানুলকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয় পুলিশ।