বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ থাকা প্রশান্ত কুমার (পিকে) হালদার দেশে ফেরার সঙ্গে সঙ্গে তাকে গ্রেফতারের নির্দেশ এসেছে উচ্চ আদালত থেকে।
আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স সার্ভিসেস লিমিটেড-আইএলআইএফএস ও এনআরবি গ্লোবার ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালককে দেশে আসার অনুমতিও দেয়া হয়েছে।
বুধবার বিচারপতি মুহাম্মদ খুরশীদ আলম সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন পিকে হালদার। তার বিরুদ্ধে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং থেকে নানা কৌশলে দেড় হাজার কোটি এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে আরও দুই হাজার কোটি টাকা বের করে বিদেশে পাচারের অভিযোগ আছে।
টাকা উদ্ধারে সহযোগিতা করতে আগামী ২৫ অক্টোবর তিনি ‘নিরাপদে’ দেশে ফেরার সুযোগ চেয়ে আবেদন করেছিলেন।
এই আবেদনের নিয়ে শুনানিতে আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, দুদকের পক্ষে খুরশীদ আলম খান। অন্যদিকে ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের পক্ষে শুনানি করেন মাহফুজুর রহমান মিলন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান নিউজবাংলাকে জানান, ‘পিকে হালদারকে দেশে ফিরতে অনুমতি দিয়েছে হাইকোর্ট। তবে আদালত বলেছেন, দেশে ফেরামাত্রই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশের হেফাজতে নিতে।’
গত ৭ সেপ্টেম্বর পিকে হালদারের দেশে ফেরার বিষয়ে একটি আবেদন হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। ওই আবেদনে বলা হয়, পিকে হালদার ও তার স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বিনিয়োগকারীদের যে টাকা নিয়ে গেছেন তা উদ্ধার করতে দেশে ফিরতে চান। এজন্য দুদক বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে থাকতে চান আদালতের কাস্টডিতে।
আদালতে শুনানিতে পি কে হালদারের দেশে ফেরার টিকিটের অনুলিপিও জমা দেয়া হয়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, রিলায়েন্স ফিন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থাকা অবস্থায় আত্মীয়-স্বজনকে দিয়ে ৩৯টি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন পিকে হালদার। এসব প্রতিষ্ঠানের পরিচালক হিসেবে থাকা ৮৩ জনের ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে কৌশলে সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তিনি ও তার সহযোগীরা।
হালদারের বিরুদ্ধে ৩০০ কোটি টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
চলতি বছরের শুরুতে পি কে হালদার বিদেশে পালিয়ে যান বলে তথ্য পাওয়া যায়। এরপর তার পাসপোর্ট, সম্পত্তি জব্দ করা হয়। আইএলএফএসএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক থেকে অপসারণও করা হয়।