রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের মূল সরঞ্জাম ‘নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল’ ওএকটি ‘স্টিম জেনারেটর’ দেশে এসে পৌঁছেছে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান নিউজবাংলাকে বলেছেন, এই রিঅ্যাক্টর বা চুল্লিপাত্র বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মূল অংশ। নিউক্লিয়ার রড ভেঙে এখানে তা থেকে তাপ উৎপাদন করা হবে। সেই তাপ থেকে আসবে বিদ্যুৎ।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রোসাটমের যন্ত্র উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাটোমেনারগোম্যাশ যন্ত্র দুটি তৈরি করেছে। আগস্টের শুরুতে এগুলো যাত্রা শুরু করে।
৩৩৩ দশমিক ৬ টন ওজনের রিয়্যাক্টর ও ৩৪০ টন ওজনের স্টিম জেনারেটর দুটি রাশিয়া থেকে কৃষ্ণসাগর ও সুয়েজখাল অতিক্রম করে ১৪ হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে মোংলা সমুদ্র বন্দরের বহির্নোঙ্গরে পৌঁছায়।
মন্ত্রী, ‘রাশিয়ার ভলগা নদী থেকে যাত্রা করে পদ্মা নদী হয়ে পাবনার ঈশ্বরদীতে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রে গিয়ে যাত্রা শেষ হবে।’
জাহাজ থেকে বিশেষ এ ইক্যুপমেন্ট রাশান ফেডারেশনের সমুদ্রগামী জাহাজ থেকে বাংলাদেশের স্থানীয় বিশেষ বার্জে স্থানান্তর করা হবে।
৫ নভেম্বর মোংলা বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে নদীপথে চাঁদপুর হয়ে আনুমানিক ২১ নভেম্বর পদ্মাপাড়ে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের নতুন নৌ-বন্দরে পৌঁছাবে।
এর মধ্য দিয়ে পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজ অনেকদূর এগিয়ে গেল বলে মনে করছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী।
নিউজবাংলাকে তিনি বলেন, ‘এটা একটা মাইলস্টোনই আমি বলব। এটা একটা বড় অর্জন। করোনার কারণে আমরা এটা নিয়ে হইচই করতে পারলাম না।’
রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের স্টিম জেনারেটর
মন্ত্রী জানান করোনার সময়েও রুশ সরকারের সহায়তায় চার্টার্ড বিমানে করে তাদের প্রকৌশলীরা সরাসরি এসেছেন। তাই কাজ পুরোদমেই চলেছে।
‘আমরা কিন্তু একটুও কাজ বন্ধ রাখিনি। আবার কাজ বাস্তবায়নের সময়ও পিছিয়ে নাই’-বলেন মন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৩ সালের অক্টোবরে রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভিত্তি স্থাপন করেন। ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর রোসাটমের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান অ্যাটমস্ট্রয় এক্সপোর্টের সঙ্গে চুক্তি করে পরমাণু শক্তি কমিশন।
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়। এক লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকায় নির্মিত হচ্ছে দেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্পটি।
২০১৭ সালের ৩০ নভেম্বর কংক্রিটের মূল স্থাপনা নির্মাণের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরের বছর জুলাইয়ে দ্বিতীয় চুল্লির নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে ১২০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার প্রথম ইউনিট এবং পরের বছর সমান ক্ষমতার দ্বিতীয় ইউনিট চালুর কথা আছে।