কুমিল্লার বুড়িচংয়ের এক মাদ্রাসায় চানাচুর চুরিতে জড়িত অভিযোগ এনে ৬০ শিশু শিক্ষার্থীকে আধা ঘণ্টা ‘হেড-ডাউন’ (মাথা নিচে পা উপরে রাখা) শাস্তি দেয়া হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, উপজেলার শংকুচাইল আশ্রাফুল উলুম হাফেজিয়া নুরানীয়া ফুরকানিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা মাদ্রাসার সভাপতিসহ চারজন শিক্ষক সোমবার সন্ধ্যায় তাদের এ শাস্তি দেন। এতে ২৫ শিক্ষার্থীর কারো বমি হয়, কারো নাক-মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়ে যায়।
গুরুতর অসুস্থ শিক্ষার্থীদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে গিয়ে মাদ্রাসাটি ঘেরাও করে। পরে পুলিশ শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
এ ঘটনায় এক অভিভাবকের করা মামলায় মাদ্রাসার সভাপতিসহ চার শিক্ষক মঙ্গলবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তারা হলেন- মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি বাদশা মিয়া, শিক্ষক মো. মোতালেব, মিজানুর রহমান ও সফিকুল ইসলাম।
গুরুতর অসুস্থ শিক্ষার্থীরা হলো- ইসমাইল হোসেন বাঁধন (১০), এনায়েত (১০), হিফজুল করিম (৮), মো. আশ্রাফুল (১০), সাকিব (১২), আশিকুর রহমান (১১), রুহুল আমিন (৯), জুনায়েদ (১০), সাইফুল ইসলাম (৯), মো. সিফাত (৯) ও মো. ছাব্বির (১০)।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার মাদ্রাসাটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নিয়ে মাদ্রাসা খোলা হবে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, পাশের ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বাগড়া গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে আল-আমিন (১০) কয়েকদিন ছুটি কাটিয়ে মায়ের সঙ্গে সোমবার বিকালে মাদ্রাসায় আসে। এ সময় আল-আমিনকে একপ্যাকেট চানাচুর কিনে দেন তার মা।
পরে প্যাকেট খুঁজে না পেয়ে মাকে ফোনে জানায় আল-আমিন। এরপর সন্ধ্যায় মাদ্রাসার সভাপতি ও শিক্ষকেরা চানাচুর চুরির অভিযোগে ৬০ শিশু শিক্ষার্থীকে আধা ঘণ্টা ‘হেড-ডাউন’ শাস্তি দেন। বুড়িচং থানার ওসি মোজাম্মেল হোসেন জানান, এ ঘটনায় এক শিক্ষার্থীর বাবা মো. ফিরোজ মিয়া মামলা করেছেন। এর পরেই গ্রেফতার ৪ জনকে মঙ্গলবার আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাদের কারাগারে পাঠিয়েছে।