রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল আবার চালুর দাবিতে খুলনায় সমাবেশ ও সড়ক অবরোধ হয়েছে। খান জাহান আলী থানাধীন আটরা শিল্পাঞ্চলে সোমবার সকালে এ কর্মসূচি চলাকালে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।
এ ঘটনায় পুলিশসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ১৫ জনকে আটক করেছে।
২৫টি পাটকল আবার রাষ্ট্রীয় মালিকানায় চালু, পাটকলগুলোকে আধুনিকায়নসহ ১৪ দফা দাবিতে সোমবার সকাল ১০ টা থেকে কর্মসূচি শুরু হয়। পাটকল রক্ষায় সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের ব্যানারে ইস্টার্ন জুট মিল গেটে সমাবেশ ও পরে খুলনা-যশোর মহাসড়ক অবরোধ করা হয়।
বেলা সাড়ে এগারটার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। আন্দোলনকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। তদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোঁড়ে।
সম্মিলিত নাগরিক পরিষদের কর্মী নাঈম রহমান জানান, অবরোধ কর্মসূচির পরপরই পুলিশ তাদের উঠে যেতে বললে সংঘর্ষের শুরু হয়। পুলিশ সেখান থেকে বেশ কয়েক জনকে আটক করে। এ ঘটনায় আহত ছয় জনকে ফুলতলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়।
নগরের খানজাহান আলী থানার দায়িত্বরত কর্মকর্তা সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) তাহমিনা ১৫ জনকে আটকের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের টাকা দেয়া শুরু
খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের টাকা দেয়া শুরু হয়েছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। সোমবার দুপুর একটায় প্লাটিনাম জুবিলী জুট মিলস অফিসার্স ক্লাব চত্বরে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) আয়োজনে নগদ অর্থ ও সঞ্চয়পত্র বিতরণ অনুষ্ঠান হয়।
উদ্বোধনী দিনে প্লাটিনাম জুট মিলের ৪৫ জন শ্রমিককে সঞ্চয়পত্র ও টাকার স্লিপ দেওয়া হয়।
খুলনা বিভাগীয় শ্রম অধিদফতরের পরিচালক মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান বলেন, কারখানাগুলো জিটুজি, পিপিপি অথবা লিজিংয়ের মাধ্যমে নতুন করে চালুর চেষ্টা চলছে।
তিনি শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধের বিষয়ে বলেন, শ্রমিকদের পাওনার চেয়ে সরকার ১৩ থেকে ২৭ শতাংশ টাকা বেশি দিয়েছে। কোনো নেতা বা দালাল এ টাকা নিয়ে শ্রমিকদের ঠকাতে পারবে না।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। অতিথিদের মধ্যে ছিলেন খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (রাজস্ব) সুবাস চন্দ্র সাহা, পুলিশের খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার মহিদ উদ্দিন, খুলনা মহানগর পুলিশের কমিশনার মাসুদুর রহমান ভূঞা, র্যাব-৬ এর পরিচালক লে. কর্নেল রওশনুল ফিরোজ, বিজেএমসির সচিব এ এফ এম এহতেশামুল হক প্রমুখ।
লোকসান থেকে বাঁচতে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলগুলোর ২৪ হাজার ৮৮৬ স্থায়ী শ্রমিককে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের (স্বেচ্ছা অবসরে) মাধ্যমে অবসরে পাঠানো হচ্ছে বলে গত ২৮ জুন ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে জানান বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী।
১ জুলাই বিজেএমসির ২৫টি পাটকল বন্ধ ঘোষণা করে সরকার।