করোনার দ্বিতীয় ঢেউ নিয়ে আগেই সতর্ক করা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মাস্কের ব্যবহার নিশ্চিত করতে কঠোর হতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ জন্য ভ্রাম্যমাণ আদালত চালাতেও বলা হয়েছে।
সোমবার মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল সভায় এই নির্দেশনা এসেছে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘মন্ত্রিসভা থেকে নির্দেশনা এসেছে মাস্ক ছাড়া কেউ বাইরে চলাফেরা করতে পারবেন না। এটা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনে আইন প্রয়োগ করা হবে।’
মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করবে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালতও ব্যবস্থা নেবে।’
আরও পড়ুন: করোনায় আরও ২১ মৃত্যু
তিনি বলেন, ‘লোক সমাগমের জায়গায় মাস্ক ব্যবহারের নির্দেশনা যাতে স্লোগানে পরিণত হয় সেদিকে নজর রাখার পরামর্শ এসেছে।’
সামনে দুর্গাপূজা ও অন্যান্য জনসমাগমে কেউ যেন মাস্ক ছাড়া না আসে তার ওপরও জোর দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠক
মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করে গত ২১ জুলাই প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মেডিকেল শিক্ষা বিভাগ। আদেশ অমান্য করায় দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বিপুল সংখ্যক মানুষকে জরিমানাও করেছে।
সংক্রমণ আইন-২০১৮ অনুযায়ী মাস্ক না পরে বা অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি না মেনে বাইরে চলাচল করলে সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদণ্ড বা এক লাখ টাকা জরিমানা হতে পারে।
অবশ্য গত ১৩ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক ঘোষণায় এই আইন সতর্কতার সঙ্গে বাস্তবায়ন করতে বলা জেলা প্রশাসক ও যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বলা হয়।
করোনা মহামারীর মধ্যেও সরকার সাধারণ ছুটি বাতিল করে অর্থনীতি সচল করার চেষ্টা করছে। মানুষ বাইরে আসলেও ধারাবাহিকভাবে কমে এসেছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। দুই মাস আগে যত মানুষের পরীক্ষা করা হতো তার মধ্যে ২২ থেকে ২৩ শতাংশ শনাক্ত হলেও এখন তা ১০ শতাংশে নেমে এসেছে।
এই পরিস্থিতিতে সামাজিক দূরত্বসহ যেসব স্বাস্থ্যবিধির কথা বলা হচ্ছে, সেগুলো মানতে মানুষের মধ্যে অনীহা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ঘরের বাইরে এসেও মাস্ক পড়ছে না বহু মানুষ।
তবে আগামী শীত মৌসুম নিয়ে শঙ্কিত প্রধানমন্ত্রী। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে আগেই সতর্ক করেছেন তিনি।
করোনার এই দ্বিতীয় ঢেউ দেখা গেছে ইউরোপেও। আক্রান্ত ও মৃত্যু কমে আসায় লকডাউন তুলে দেয়া বিভিন্ন দেশ আবারও একই পথে হাঁটছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘আন্তর্জাতিক রিপোর্টিং বলছে, আবার করোনার প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। সামনে শীত মৌসুমে বাংলাদেশেও এটি বাড়তে পারে। সবার সচেতনতাই পারে এটা রোধ করতে।
‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন সবাই যেন একটু সাবধান থাকি। আমরা যেন সবাই মাস্ক ব্যবহার করি। তাহলে অন্তত আক্রান্ত হওয়ার হার কম থাকবে।’
বৈঠকে গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী আর সচিবালয় প্রান্ত থেকে যুক্ত ছিলেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবরা।