মণ্ডপে মণ্ডপে শুরু হয়েছে দেবী দুর্গার আগমনের শেষ সময়ের প্রস্তুতি। বাঁশ, খড়ের কাঠামোতে মাটির আস্তরণে অবয়ব পেয়েছে দেবী দুর্গা। লক্ষ্মী, গণেশ, সেনাপতি কার্তিক, কলাবউ মৃত্তিকা, সাপে বেষ্টিত মহিষাসুর বধে দেবীকে সুনিপুণ কর্মে ফুটিয়ে তুলেছেন প্রতিমা শিল্পীরা।
রঙের আঁচড় আর সাজসজ্জায় দুর্গাদেবীকে সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন ঢাকার ধামরাই এলাকার প্রতিমা শিল্পীরা। ধামরাই পৌর এলাকাসহ এবার উপজেলার ১৬টি ইউনিয়নের মণ্ডপে চলছে পূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। করোনায় ইউনিয়ন পর্যায়ে কমলেও পৌরসভা এলাকায় মণ্ডপের সংখ্যা আগের চেয়ে বেশি।
উপজেলার গাঙ্গুটিয়া ইউনিয়নের বারবাড়িয়া ঠাকুর বাড়িতে দেখা গেল দুর্গোৎসবকে ঘিরে প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততা। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি তারা এখন ব্যস্ত প্রতিমাগুলোকে রঙ করতে। তাদেরই একজন শিল্পী বাদল। সবাইকে নির্দেশনা দিচ্ছেন নির্ভুল কাজের।
শিল্পী বাদল চন্দ্র পাল জানালেন, করোনার কারণে গত বছরের চেয়ে এবার প্রতিমা কম বানানো হচ্ছে।
তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘প্রতিবারের মতো প্রতিমা বানাতে ব্যস্ত সময় কাটছে। অধিকাংশ মণ্ডপেই দেবীর অবয়ব তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। এখন চলছে প্রতিমাগুলোতে রঙের কাজ।’
প্রতিমা শিল্পী সম্পদ পাল বলেন, প্রতিবছর রথের পরপরই দুর্গা গড়ার কাজ শুরু হয়। এ বছর পূর্ণিমার কারণে পূজা দেরিতে হচ্ছে। প্রতিমাও তাই দেরিতে তৈরি হচ্ছে।
তিনি জানান, দুর্গাপূজার জন্য একটা পুরো সেট প্রতিমা বানাতে ৫ থেকে ৬ শিল্পীর অন্তত ১৫ দিনের মতো সময় লাগে। অন্যান্য বছর ৮ থেকে ১০টা প্রতিমা তৈরির অর্ডার পেলেও এবার করোনার প্রভাবে তা কমে গেছে। এ বছর তিনি পেয়েছেন মাত্র পাঁচটি প্রতিমা তৈরির কাজ।
আরেক প্রতিমা শিল্পী রাহুল পাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মায়ের কাজ করতে ভালো লাগে। মায়ের রূপ অন্তরে নিয়ে কাজ করি। মা দুর্গার জন্য ভোর থেকে মাঝরাত অবধি কাজ করেও ক্লান্তি আসে না।’
উপজেলার বারবাড়িয়া ঠাকুরবাড়ি মণ্ডপের পূজার খুব নামডাক রয়েছে এলাকায়। এর আয়োজক দ্বিজেন চক্রবর্তী জানান, এই মন্দিরে গত ২০ বছর ধরে নিয়মিত পূজার আয়োজন হচ্ছে। এ বছর প্রতিমা তৈরিতে আগের চেয়ে কিছুটা কম খরচ করছেন তারা। কোভিড-১৯ সংক্রমণের কারণে পূজার আয়োজনও সীমিত করে আনছেন তারা।
ধামরাই পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নন্দ গোপাল সেন বলেন, প্রতিবছর উপজেলায় ১৬০টির মতো মণ্ডপে পূজা হয়। এ বছর করোনার কারণে কমে এসেছে।
তিনি জানান, এরইমধ্যে মণ্ডপগুলোতে প্রতিমার কাঠামোর কাজ শেষ করে রঙের কাজ শুরু করেছেন। রঙ শেষ হলেই শুরু হবে সাজসজ্জার কাজ।
এবারের পূজায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে সবাইকে দেবীদুর্গা দর্শনের অনুরোধ জানান নন্দ গোপাল।