চেক প্রত্যাখ্যান মামলার বিচার হবে শুধুমাত্র যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। এ আদালতের বিচারে ক্ষুব্ধ ব্যক্তি শুধু সংশ্লিষ্ট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করতে পারবেন।
যেসব মামলা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে তা ১৫ দিনের মধ্যে যুগ্ম জেলা জজ আদালতে পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আদালতের এই নির্দেশনা দেশের সকল জেলা ও দায়রা আদালতকে অবহিত করতে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে বলা হয়েছে।
চেক প্রত্যাখ্যান সংক্রান্ত এক মামলার রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার এক রায়ে এ নির্দেশ দেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার গোমস্তাপুর থানার এএএম জিয়াউর রহমান নামের এক ব্যক্তির করা আবেদনের শুনানি শেষে এ রায় দিল আদালত।
এ রায়ের ফলে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি কমবে; বিচারিক বিশৃংখলা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা।
আদালত তার রায়ে বলেছে, এখন থেকে নেগোশিয়েবল ইনস্ট্রুমেন্ট (এনআই) অ্যাক্ট-১৮৮১ এর ১৩৮ ধারার অধীনে চেক প্রত্যাখ্যান মামলার প্রাথমিক শুনানি বা বিচার হবে শুধুমাত্র যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। আর এই আদালতের রায় বা আদেশের বিরুদ্ধে শুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করা যাবে।
আদালতে আবেদনকারীপক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার, ব্যারিস্টার মাজেদুল কাদের ও ব্যারিস্টার মোজাম্মেল হক।
এএএম জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনারের অভিযোগে পৃথক তিনটি মামলা করে ইসলামী ব্যাংক। মামলাটি চাঁপাইনবাবগঞ্জ যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন।
ওই তিন মামলার কার্যক্রম চ্যালেঞ্জ করে ২০১৮ সালের ১৮ অক্টোবর রিট আবেদন করেন তিনি। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে রুল জারি করা হয়। এই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে রোববার রায় দেয় হাইকোর্ট।
আইনজীবী ব্যারিস্টার হুমায়ুন কবির পল্লব সাংবাদিকদের বলেন, বর্তমান এনআই অ্যাক্টের ১৩৮ নম্বর ধারার অধীনে চেক প্রতারণার মামলার শুনানি হয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। কোন আদালতে শুনানি হবে তা নির্ধারণ করে দেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত।
তিনি বলেন, যুগ্ম জেলা জজ আদালতের কোনো আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হয় জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। আর অতিরিক্ত জেলা জজ আদালত কিংবা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আদেশ ও রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হয় হাইকোর্টে। ফলে বিচারিক বিশৃংখলার সৃষ্টি হচ্ছে। এজন্য একটি নির্দিষ্ট আদালতে মামলার শুনানি এবং একটি নির্দিষ্ট আদালতে আপিল দাখিল হওয়া প্রয়োজন। এ কারণে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হয়।