রেল লাইনে ঘুমিয়ে তিন জনের প্রাণহানির মতো শোক প্রায়ই সইতে হচ্ছে নেত্রকোণাবাসীকে। ট্রেনের চাকায় পড়ে মৃত্যু এখানে মোটেও বিরল না।
গত এক বছরে এই জেলার ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন অন্তত ১৫ জন। রেলের কর্মকর্তারা জোর দিয়েছেন জনসচেতনতা বাড়ানোর ওপর।
নেত্রকোণা রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার রফি উদ্দিন জানান, জেলার ৬৮ কিলোমিটার রেলপথে ট্রেন চলাচল তত্ত্বাবধান করার জন্যে রয়েছে ১২ টি স্টেশন। এই পথে আন্তঃনগর, কমিউটারসহ লোকাল ট্রেন চলাচল করে। প্রায়ই এই পথে ট্রেনে কাটা পড়ে নিহতের ঘটনা ঘটছে।
রোববার ভোরে বারহাট্টার স্বল্পদশাল গ্রামে ট্রেনে কাটা পড়ে মারা গেছেন তিন জন দিনমজুর।
দুঃখজনক এই ঘটনাটি যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের অসচেতনতাকেই তুলে ধরে। পুলিশ জানিয়েছে, রেল লাইনের পাশে মাছ ধরে ক্লান্ত হয়ে লাইনেই ঘুমিয়ে পড়েছিলেন তিন জন। রাতে ট্রেনের চালকের পক্ষে কিছু জানা সম্ভব ছিল না। ট্রেনের কাটায় থেমে গেছে তাদের জীবনের চাকা।
বারহাট্টার স্টেশন মাস্টার আতাউর রহমান বলেন, অনেকেই মোবাইল ফোন হাতে ও কানে ইয়ারফোন লাগিয়ে রেলপথের ওপর দিয়ে হাঁটতে থাকেন। পরে এ ধরনের লোকজন রেলে কাটা পড়ে মারা যান বেশি।
আরও পড়ুন: রেললাইনে ঘুমিয়ে গেল তিন প্রাণ
বারহাট্টা সদরের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণ মানুষ অসচেতন। তাই বলে তাদের রেল বিভাগ চুপ করে থাকবে, তা মানা যায় না। মানুষদের সচেতন করতে রেল কর্তৃপক্ষ প্রচার চালাতে পারে।
স্বল্পদশাল গ্রামের যুবক আয়েন উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘রেল বিভাগের প্রকৌশলী শাখা, রেল পুলিশসহ কয়েকটি শাখা রয়েছে। তারা তো মাঝেমাঝে টহল দিতে পারেন। এতে মানুষ সচেতন হতে পারে।’
বারহাট্টা রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার আতাউর রহমান বলেন, ‘প্রতিটা স্টেশনের আউটার টু আউটার পোস্ট নাগাদ রেলপথের নিরাপত্তার দায়িত্ব স্টেশন মাস্টারের। কিন্তু লোকবলের অভাব ও মানুষের অসচেতনতার কারণে মৃত্যু রোধ করা যাচ্ছে না। মৃত্যু ঠেকাতে হলে সচেতনতাই বাড়াতে হবে।’
‘রেলেপথ এড়িয়ে চলা বা রেলপথের পাশ দিয়ে গেলে কীভাবে চলাফেরা করতে হবে তা নিয়ে স্কুল, মসজিদ, বাজারের মতো স্থানগুলোতে প্রচার চালাতে হবে।’- বলেন এই কর্মকর্তা।
তবে এই ধরনের কোনো উদ্যোগ রেল বিভাগ কখনো নেয়নি। আর নেবে কি না, সে প্রশ্নেরও জবাব মেলেনি।