প্রায় সোয়া তিন মাস পর বাংলাদেশি ফ্লাইটের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়েছে ইতালি। সেই সঙ্গে যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে, তারা নতুন করে আবেদন করতে পারবেন।
করোনার প্রাদুর্ভাবের আগে বাংলাদেশে এসে যারা ফিরতে পারছিলেন না, তাদের জন্য ফেরার পথ সুগম হলো।
বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘আমাদের অনুরোধে, ইতালিতে অবস্থানের বৈধতা থাকা বাংলাদেশিদের জন্য ফ্লাইটের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন। ফাইল ছবি
‘যাদের যাদের বৈধতার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তাদের ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। তাদের বিষয়টি দেশটির পুলিশ যাচাই করবে এবং তারপর তাদের ভিসা দেয়া হবে।
যে কয়টি দেশ করোনাভাইরাসে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তার একটি ইতালি। আক্রান্তের তুলনায় মৃত্যুহার বিশ্বে সবচেয়ে বেশি দেশটিতে।
এই পরিস্থিতিতে গত মার্চে ইতালি থেকে বিপুল সংখ্যক বাংলাদেশি বাংলাদেশে চলে আসেন। জুনে ইতালির আকাশপথ খুললে সীমিত পরিসরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট শুরু হয়।
- আরও পড়ুন: ফ্লাইট চালুর দাবি ইতালি প্রবাসীদের
গত ৬ জুলাই বাংলাদেশ থেকে রোমে যাওয়া একটি ফ্লাইটের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক যাত্রীর শরীরে করোনা শনাক্ত হয়। এরপর বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের ফ্লাইট বাতিলের ঘোষণা দেয় ইতালি।
এ ঘোষণার পরও ৮ জুন বাংলাদেশ থেকে কাতার হয়ে ইতালিতে যাওয়া দুটি ফ্লাইটের ১৬৮ বাংলাদেশিকে ফিরিয়ে দেয় দেশটি।
শুরুতে ৭ দিনের জন্য নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলেও পরে তা বাড়ানো হয় ৫ অক্টোবর পর্যন্ত।
ফ্লাইট চালু ও ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধির দাবিতে গত ১১ অক্টোবর ঢাকায় ইতালি দূতাবাসের সামনে মানববন্ধন করেন কয়েকশ ইতালি প্রবাসী।
সে সময় যাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়েছে, তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে মেয়াদ বৃদ্ধি, বাংলাদেশ থেকে ইতালির ফ্লাইট চালু এবং বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে ইতালি প্রবাসীদের সহায়তার দাবি জানানো হয়।
ইতালি দূতাবাস, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে স্মারকলিপিও পাঠান প্রবাসীরা। সে সময় দূতাবাস এক সপ্তাহ সময় চায়। আন্দোলনকারীরা দূতাবাসের সিদ্ধান্ত দেখে ১৯ অক্টোবর নতুন পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানায়। তবে এর আগেই সিদ্ধান্ত নিল ইতালি।
আরও পড়ুন: সৌদির বিমান টিকিট ভিসার মেয়াদের ওপর
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন বলেন, ‘ইতালির রাষ্ট্রদূত তাকে আশ্বস্ত করেছেন কম সময়ের মধ্যে তারা পুলিশের যাচাই শেষ করার চেষ্টা করবেন।’
‘ইতালি এখনও নিয়মিত ভিসা দেবে না। শুধুমাত্র যাদের ইতালিতে অবস্থানের বৈধ কাগজ আছে (এবং যাদের কাগজের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে তাদের ক্ষেত্রে ইতালিয়ান কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে) তাদের জন্য এ ফ্লাইটের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হয়েছে’-বলেন মন্ত্রী।
করোনার কারণে বাংলাদেশে আটকে পড়া সৌদি প্রবাসীরাও টিকিটের দাবিতে বিক্ষোভ করে চলছে গত এক মাস ধরে। সৌদি বিমান সংস্থা বারবার আশ্বাস দিলেও প্রবাসীদের দুর্ভোগ লাঘব হচ্ছে না।