রিমান্ড শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর করা ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার দুই আসামির জামিন চেয়ে তার আইনজীবী স্বীকার করেছেন, তারা অনলাইনে ওই তরুণীর বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়েছিলেন। আর সেটা করেছেন মামলার প্রধান আসামি হাসান আল মামুনের কথায়।
দুই দিনের রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার নুরুল হক নুরের সংগঠন সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহ-সভাপতি নাজমুল হুদাকে আদালতে তোলা হয়।
তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত দুই জনকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। অন্যদিকে জামিন আবেদন করেন আইনজীবী সিরাজুল ইসলাম।
শুনানিতে সিরাজুল বলেন, ‘হাসান আল মামুনের কথায় এই দুইজন শুধুমাত্র প্রচারণা চালিয়েছিল।’
গত ২০ সেপ্টেম্বর হাসান আল মামুনকে প্রধান আসামি করে ধর্ষণের মামলা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী। এতে নুর ও এই দুই আসামির বিরুদ্ধে আনা হয় অপপ্রচার ও সহযোগিতার অভিযোগ।
পরে নুরের আরেক সহযোগী নাজমুল হাসান সোহাগের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও অনলাইনে অপপ্রচারের অভিযোগ এনে একই আসামিদের বিরুদ্ধে আরও দুটি মামলা করেন বাদী।
নুরুল হক নুরসহ ছয় আসামিকে গ্রেফতারের দাবিতে গত ৮ অক্টোবর থেকে অনশন করছেন বাদী
গত রোববার রাতে দ্বিতীয় মামলার চার ও পাঁচ নম্বর আসামি সাইফুল ও নাজমুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরদিন তাদেরকে আদালতে তোলা হলে দুই দিনের রিমান্ডে পাঠায় আদালত।
রিমান্ড শেষে শুনানিতে দুই আসামির আইনজীবী বলেন, ‘সাইফুল বা নাজমুলের বিরুদ্ধে মামলার এজহারে কোন কথা নেই। হাসান আল নমামুনের বাসায় স্বেচ্ছায় ওই নারী শিক্ষার্থী গিয়েছিলেন। তাদের সম্পর্ক ব্রেক আপের পর এ ঘটনা ও মামলা। বহু বছর আগের একটি ঘটনা উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিয়ে আসা হয়েছে।’
এর বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন বলেন, ‘ফৌজদারি অভিযোগের কোন টাইম বার নাই। যে কোনো সময় মামলা করা যায়।’
এই ঘটনায় তিনটি মামলা করা বাদী সম্প্রতি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে আরও একটি মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেফতারের দাবিতে তিনি গত ৮ মার্চ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য পাদদেশে অনশনও করছেন।
গত রোববার রাতে লাইভে এসে নুর বাদীকে ‘দুশ্চরিত্রাহীনা’ আখ্যা দেন। একই সঙ্গে সোহাগ ধর্ষণ করেননি, সব কিছু স্বেচ্ছায় হয়েছিল বলে দাবি করেন। এই ঘটনায় নুরের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে করা মামলা তদন্ত করে ২৯ নভেম্বরের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। পুলিশের তদন্ত সংস্থা পিবিআই এই তদন্ত করবে।