সিলেটে রায়হান হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভূঁইয়া যেন দেশ ছেড়ে যেতে না পারেন, সে জন্য ইমিগ্রেশন বিভাগসহ সীমান্তে সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার পুলিশ ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানানো হয়।
পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেন, এই মামলায় আকবর গুরুত্বপূর্ণ। তাকে আটক করা গেলে অনেক তথ্য জানা যাবে।
বনজ কুমার বলেন, ‘মামলার নথি আমরা গত পরশু দিন (মঙ্গলবার) রাতে পেয়েছি। তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে মনে হয়েছে আকবরকে আমাদের দরকার। তাই সব ইমিগ্রেশনে জানিয়ে দিয়েছি, সে যেন কোনোভাবেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে না পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে। তাকে ধরার জন্য আমরা টিম রেডি করেছি।’
পিবিআই প্রধান বলেন, ‘আকবর যেহেতু বাহিনীর সুনাম নষ্ট করেছে, আমাদের কথা চিন্তা করেনি, তাই তার বিষয়েও কোনো চিন্তা করার সুযোগ নেই।’
সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার
রোববার ভোরে সিলেট শহরের কাস্টঘর এলাকায় ছিনতাইকারী সন্দেহে গণপিটুনির শিকার হয়ে রায়হানের মৃত্যু হয় বলে দাবি পুলিশের। যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের সন্দেহ, পুলিশ হেফাজতে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে।
ওই এলাকার ক্লোজড সার্কিট টেলিভিশন (সিসিটিভি) ফুটেজে যুবককে গণপিটুনির কোনো প্রমাণই মেলেনি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মুনিম।
রায়হানের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশের নির্যাতনেই তার মৃত্যু হয়। এ ছাড়া ফাঁড়ি থেকে ফোন দিয়ে তাদের কাছে ১০ হাজার টাকাও চাওয়া হয়েছিল।
সোমবার এ ঘটনায় রায়হানের স্ত্রী একটি মামলা করেন।
ওই দিনের ঘটনায়পুলিশ সদস্যদের কর্তব্যে অবহেলা ও অদক্ষতার প্রমাণ পাওয়ায় প্রাথমিকভাবে ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেনসহ চার জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তিন জনকে প্রত্যাহার করা হয়।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া চার জন হলেন ফাঁড়ি ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন, সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) তৌহিদ মিয়া, কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাশ ও হারুনুর রশীদ। আর প্রত্যাহার হওয়া তিন জন হলেন এএসআই আশীক এলাহী, কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজীব হোসেন।
রায়হানের বাড়ি সিলেট নগরীর আখালিয়া নেহারিপাড়া এলাকায়। তিনি দুই বছর ধরে সিলেট জেলা স্টেডিয়াম মার্কেটের এক চিকিৎসকের চেম্বারে সহকারীর কাজ করতেন।