রাজধানীর বস্তিতে করোনা সংক্রমণ কম বলে যে ধারণা রয়েছে, তার বিপরীত তথ্য মিলেছে একটি জরিপে।
গবেষকদের ধারণা বস্তিবাসীদের ৭৫ শতাংশেই এই ভাইরাসে আক্রান্ত। আর গোটা রাজধানীর প্রায় অর্ধের মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে জরিপে।
গবেষণা অনুযায়ী, আক্রান্তদের মধ্যে ২৪ শতাংশের বয়স ৬০ বছরের বেশি।
দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি ও জিন রূপান্তর নিয়ে গবেষণাটি করেছে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) ও বেসরকারি আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, (আইসিডিডিআরবি)।
সোমবার বিকালে এক অনুষ্ঠানে গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এই গবেষণার জন্য ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১২৯টি ওয়ার্ডের মধ্য থেকে দৈবচয়ন ভিত্তিতে ২৫টি ওয়ার্ড বেছে নেওয়া হয়।
প্রতি ওয়ার্ড থেকে একটি মহল্লা বাছাই করা হয়। প্রতি মহল্লা থেকে ১২০টি খানা জরিপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এ ছাড়া আটটি বস্তিকে এ জরিপে যুক্ত করা হয়।
ঢাকা শহরের সাধারণ খানার নমুনা সংগ্রহ করা হয় মধ্য এপ্রিল থেকে মধ্য জুলাই পর্যন্ত। আর বস্তির মানুষের নমুনা সংগ্রহ করা হয় মধ্য জুলাই থেকে আগস্টের শেষ পর্যন্ত।
করোনাভাইরাসের জিন বিশ্লেষণ করে গবেষকেরা অনুমান করছেন, ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি দেশে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছিল।
করোনার কোনো লক্ষণ ছিল না এমন ৪৫ শতাংশ নগরবাসী করোনায় আক্রান্ত হয়েছে বলে রক্ত পরীক্ষায় ধরা পড়েছে।
গবেষকেরা বলছেন সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ, চিকিৎসা ও টিকা দেওয়ার ব্যাপারে এসব তথ্য কাজে লাগবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) মীরজাদী সেব্রিনা। এ সময় অনলাইনে যোগ দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক।
যদিও আইইডিসিআর প্রতিদিন করোনা পরীক্ষার ভিত্তিতে যে আপডেট দেয়, তাতে ঢাকায় আক্রান্ত কত, তা হিসাব দেয়া হয়নি। সেখানে কেবল সারাদেশের হিসাব দেয়া হয়।
সবশেষ তথ্য অনুযায়ী সারাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখ ৭৯ হাজার ৭৩৮। আক্রান্তের সিংহভাগ ঢাকায়, এই বিষয়টি প্রথম থেকেই বলা হচ্ছিল।
সরকারি হিসাবে ঢাকায় এখন পর্যন্ত মারা গেছে দুই হাজার ৮২৯ জন। সারা দেশের মৃত্যুর ৫০.৯৩ শতাংশই রাজধানীর। বোরবার পর্যন্ত সারাদেশে মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার ৫৫৫ জন।