ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ধর্ষণ ও ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগে করা মামলায় ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের সংগঠন ছাত্র অধিকার পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সহসভাপতি নাজমুল হুদাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আসামিদের গ্রেফতারে বাদীর চলা অনশনের চতুর্থ দিন রোববার রাতে তাদেরকে গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
এই মামলায় ছয় আসামির মধ্যে নুরও একজন। তার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ।
সোমবার দুপুরে বিষয়টি জানিয়েছেন লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) রাজীব আল মাসুদ।
নিউজবাংলাকে ডিসি রাজীব বলেন, রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় একাধিক অভিযান চালিয়ে মামলার চার ও পাঁচ নম্বর আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে সোহরাব হোসেন নামে আরও একজনকে তুলে নেয়ার অভিযোগ করা হয়েছিল রোববার রাতে। এই নামে কাউকে আটক করা হয়নি বলে জানিয়েছেন ডিসি রাজীব।
তিনি বলেন, গ্রেফতার দুইজনকে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
তিন জনকে ‘গুম করার’ অভিযোগ এনে সোমবার শাহবাগে বিক্ষোভ করেছে সাধারণ ছাত্র পরিষদ।
ধর্ষণ মামলায় গ্রেফতার দুই জনকে গুম করার অভিযোগ এনে শাহবাগে নুরুল হক নুরের সংগঠন সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের সমাবেশ। ছবি: মেরিনা মিতু
আরও পড়ুন: নুরদের গ্রেফতার দাবিতে অনশনে সেই ছাত্রী
গত ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লালবাগ থানায় সাধারণ ছাত্র সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন বাদী। অভিযোগ করা হয়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে।
ভিপি নুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মীমাংসার আশ্বাস দিয়েও কথা রাখেননি। পরে চুপ হয়ে যেতে বলেন। কথা না শুনলে অনলাইনে অপপ্রচার চালানোর হুমকি দেন।
- আরও পড়ুন: ‘তবে কি আমার ভিডিও ভাইরাল হতে হবে?’
পরে ছয় আসামির বিরুদ্ধে ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর আরও দুটি মামলা করেন বাদী। দ্বিতীয় মামলায় বলা হয়, তাকে সহযোগিতার কথা বলে চাঁদপুর নিয়ে যান সোহাগ। ফেরার পথে ধর্ষণ করা হয়। এর পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে এতে অনলাইনে অপপ্রচারের অভিযোগও আনা হয়।
গত ৪ অক্টোবর গ্রেফতারের আবেদন নিয়ে আদালতে যান বাদী। বিচারক বলেন, পুলিশ চাইলে আসামিদের গ্রেফতার করতে পারে। তবে কোনো আসামিকে গ্রেফতার করা হয়নি।
পরে আসামিদের গ্রেফতারে বৃহস্পতিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে অনশনে বসেন বাদী। দাবি পূরণ না হলে কিছুতেই মুখে খাবার তুলবেন না বলে জানান তিনি। অসুস্থ হয়ে পড়লে শুক্রবার তাকে হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখান থেকে ফিরে আবার বসেন অনশনে।
পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ তরুণী বলেন, ‘পুলিশ পারে না এমন কোনো কাজ নেই। তাহলে মামুন, সোহাগ কি দেশ ছেড়েছে? তাদের ধরতে পারছে না কেন?’
এর মধ্যে সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের গঠন করা তদন্ত কমিটির দাবি, ধর্ষণের প্রমাণ নেই।
আরও পড়ুন: ‘ছবি-ভিডিও নেই’, তাই ‘ধর্ষণ হয়নি’
কমিটির প্রধান বিন ইয়ামিন মোল্লা এই সিদ্ধান্তে আসার যুক্তি হিসেবে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘কোনো ছবি, ভিডিও এমন কিছু আমরা খুঁজে পাইনি, বা অভিযোগকারী আমাদের দিতে পারেনি। তাছাড়া ধর্ষণ একটি সেনসিটিভ কেস। তাই কারও মৌখিক অভিযোগে আমরা কাউকে অপরাধী বলতে পারি না।’