বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘অবৈধ’ চার হাজার হাসপাতাল বন্ধ হবে কবে

  •    
  • ১২ অক্টোবর, ২০২০ ০৮:০০

লাইসেন্সের আবেদন না করা হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা ছিল। ১৭ হাজার হাসপাতালের মধ্যে আবেদন করেছে ১৩ হাজারের মতো। বাকিদের বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কঠোর ব্যবস্থা নিতে গঠন করা টাস্কফোর্স কমিটি।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের দুই বছর আগের জরিপ বলছে, দেশে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সংখ্যা ১৭ হাজার ২৪৪টি। শৃঙ্খলা আনতে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার ঘোষণার পর লাইসেন্স নবায়নের আবেদন জমা পড়েছে ১৩ হাজারের কিছু বেশি।   সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী চার হাজারের মতো হাসপাতাল বন্ধ করে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু একটিও বন্ধ হয়নি।   হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়নে আবেদনের শেষ সময় ছিল গত ২৩ আগস্ট। কথা ছিল যারা আবেদন করবে না, তাদের বিরুদ্ধে অভিযান চলবে। কিন্তু কারও বিরুদ্ধে হয়নি অভিযান।   যে ১৩ হাজার আবেদন জমা পড়েছে, তাদের মধ্যে হালনাগাদ লাইসেন্স আছে পাঁচ হাজার ৫১৯টির। যাচাই-বাছাই ও পরিদর্শনের অপেক্ষায় সাত হাজার ৪১টি।   অসম্পূর্ণ আবেদনপত্র পাওয়া গেছে তিন হাজার ৩০৪টি। এগুলোর কোনোটির ট্রেড লাইসেন্সই নেই, কোনোটির নেই পরিবেশ ছাড়পত্র বা অবস্থানগত ছাড়পত্র, কোনো কোনোটির অন্য ত্রুটি আছে। ফলে আইন অনুযায়ী এদেরও নিবন্ধন পাওয়ার সুযোগ নেই।   হাসপাতালের লাইসেন্সের বিষয়টি দেখভাল করার কথা টাস্কফোর্স কমিটির। লাইসেন্সের আবেদনের সময় সীমা পার হয়ে গেলেও প্রায় দেড় মাসে অবৈধ ক্লিনিক ও হাসপাতালের তালিকাই তৈরি করতে পারেনি তারা। ফলে নেয়া হয়নি ব্যবস্থা।   রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের মেডিকেয়ার ডায়াগনস্টিক অ্যান্ড হাসপাতাল। যাত্রা শুরু ২০১৫ সালে। প্রতিষ্ঠানটি অধিদফতরে আবেদন করলেও যেসব শর্তে লাইসেন্স দেয়া হবে, তার অনেক কিছুই নেই।   তরল বর্জ্য পরিশোধনে নেই শোধনাগার বা ইটিপি প্ল্যান্ট নেই মেডিকেয়ারে। বর্জ্য সরাসরি ফেলা হয় বুড়িগঙ্গা নদীতে।   হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. মিজান নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা স্বাস্থ্য অধিফতরের বিষয়। এসব বিষয়ে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’   রাজধানীর ধানমন্ডির সিআরএল ডায়াগনস্টিক সেন্টারেরও নেই পরিবেশ ছাড়পত্র। নেই ইটিপি প্ল্যান্ট। এমন হাসপাতালেও করানো হচ্ছে কোভিড পরীক্ষা।   হাসপাতালের মহাব্যবস্থাপক নিজের নাম না জানিয়ে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেছি। সরকারের নিয়ম অনুযায়ী যেভাবে টাকা জমা দেয়া হয় সেভাবেই দেয়া হয়েছে।’   পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ছাড়া কীভাবে লাইসেন্সের আবেদন করলেন, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এটা জানার দায়িত্ব আপনার না।’   দেশে বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মান নিয়ে প্রশ্ন নতুন নয়। এমনকি নামী হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে উঠে এসেছে করুণ চিত্র।   বিশেষজ্ঞ ছাড়া রোগ পরীক্ষা, মেয়াদোত্তীর্ণ রি-এজেন্ট দিয়ে রোগ পরীক্ষা, মেয়াদোত্তীর্ণ যন্ত্রপাতি ব্যবহার, অপারেশন থিয়েটারে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ, মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ব্যবহারের অভিযোগ পুরনো।   লাইসেন্স ছাড়া পরিচালনা করছে এমন অভিযোগ পেয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত নানা সময় নানা হাসপাতাল বন্ধ করেছে। কিন্তু কদিন না যেতেই আবার সেগুলো চালু হয়েছে। কখনও একই নামে, কখনও ভিন্ন নামে।   বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের লাইসেন্স নবায়ন ও নিবন্ধন জটিলতা নিরসনসহ সেবার মান বৃদ্ধি ও অনিয়ম বন্ধে গত ২৬ জুলাই ৯ সদস্যের টাস্কফোর্স গঠন করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সারা দেশের হাসপাতালে সেবার মান পর্যবেক্ষণে ৪৫ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়।   গত ৮ আগস্ট টাস্কফোর্স কমিটির সভায় ২৩ আগস্টের মধ্যে লাইসেন্স নবায়ন বা নিবন্ধন নিতে আবেদনের সময় বেঁধে দেয়া হয়। না হলে অবৈধ হাসপাতাল বন্ধের হুঁশিয়ারি দেয়া হয়।   সময়সীমার দেড় মাস পার হয়েছে। কয়টি হাসপাতাল বন্ধ করেছেন এমন প্রশ্নে টাস্কফোর্স কমিটির প্রধান ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (জনস্বাস্থ্য) মোস্তফা কামাল নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া, কাজ অব্যাহত রয়েছে।’   বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যেসব প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন নেই সেগুলো বন্ধ হোক এটা আমরাও চাই। তবে এখনও টাস্কফোর্স কমিটি এ বিষয়ে অভিযান বা বন্ধের প্রক্রিয়া শুরু করেনি।’   স্বাস্থ্য অধিদফতরের হাসপাতাল বিভাগের পরিচালক ফরিদ হোসেন মিয়া বলেন, ‘অবৈধ হাসপাতালের তালিকা তৈরি করে বন্ধ করে দিতে সিভিল সার্জন ও বিভাগীয় পরিচালকদেরকে চিঠি দেয়া হয়েছে।’   তবে গত এক মাসে একটি হাসপাতালও যে বন্ধ হয়নি, সেটিও স্বীকার করেছেন এই কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘টাস্কফোর্স কমিটির সঙ্গে একটি বৈঠক হয়েছে। এর পরে আর তেমন যোগাযোগ করা হয়নি।’   স্বাস্থ্য অধিদফতরের সীমাবদ্ধতাও আছে। বেসরকারি চিকিৎসালয় দেখাশোনার হাসপাতার শাখার কর্মকর্তা সব মিলিয়ে ১১ জন। একজন পরিচালক, দুই জন উপপরিচালক, তিনজন সহকারী পরিচালক ও পাঁচ জন মেডিকেল অফিসার।

এ বিভাগের আরো খবর