সাড়ে তিন বছর আগে রাজধানীর আদাবরে এক পোশাক কর্মীকে দল বেঁধে ধর্ষণের মামলায় দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ এসেছে ঢাকার একটি আদালত থেকে।
কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাস কারাগারে থাকার আদেশও দেয়া হয়েছে।
ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ডের দাবিতে দেশব্যাপী চলা আন্দোলনের মধ্যে এই রায় ঘোষণা হলো।
রোববার ঢাকার ৫ নম্বর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সামছুন্নাহার এ রায় ঘোষণা করেন।
ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আসগর স্বপন এই তথ্য জানান।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন: সজীব ঢালী ও আবু হাসান ওরফে সাঈদ। রায় ঘোষণার সময় তারা আদালতে হাজির ছিলেন। পরে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
এই মামলায় পলাতক দুই আসামি আকাশ ওরফে মোসলেম এবং আনোয়ার বয়তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হয়নি। তাদেরকে খালাস দিয়েছেন বিচারক।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মহসিন রেজা আদালতপাড়ার সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো সাক্ষী আসামিদের নাম বলেনি বা শনাক্ত করেনি। শুধুমাত্র স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির ভিত্তিতে তাদের সাজা দেয়া হয়েছে। এ রায়ে আমরা সংক্ষুব্ধ। আমরা উচ্চ আদালতে যাব।’
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আলী আসগর স্বপনও রায়ে খুশি নন। তিনি বলেন, ‘চারজনেরই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হলে আমরা খুশি হতাম।’
রায়ের বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি রাত সাড়ে আটটার দিকে গার্মেন্টস কর্মী ওই তরুণী কাজ শেষে বাসায় ফিরছিলেন।
আদাবর থানাধীন শ্যামলী হাউজিং প্রকল্পের পানির পাম্পের সামনে পৌঁছালে সজিব, আবু হাসানসহ অজ্ঞাতনামা দুইজন তার গতিরোধ করে টেনে হিঁচড়ে শান্তা ওয়েস্টার হাউজিং ও আজিম গার্মেন্টসের ফাঁকা মাঠে নিয়ে যায়। সেখানে দল বেঁধে ধর্ষণ করে।
পরদিন ভুক্তভোগীর মা আদাবর থানায় মামলাটি করেন। পুলিশ পরিদর্শক ইসমত আরা এমি মামলাটি তদন্ত করে চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।।
আদালত নয় জনের সাক্ষ্য শুনে এ রায় দেন।
বাংলাদেশের আইন অনুয়ায়ী ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। তবে দল বেঁধে ধর্ষণ বা ধর্ষণের ফলে মৃত্যু হলে মৃত্যুদণ্ড দেয়া যেতে পারে।
সম্প্রতি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারী নির্যাতনের পর গড়ে উঠা আন্দোলনের পর সরকার এই আইন সংশোধন করে ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদণ্ড করার উদ্যোগ নিয়েছে। সোমবার মন্ত্রিসভায় সংশোধিত আইনের খসড়া উঠতে পারে।