বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আবরারের মৃত্যুর পর চিকিৎসককে ছাত্রলীগ নেতার চাপ

  • হীরক পাশা, ঢাকা   
  • ১১ অক্টোবর, ২০২০ ২১:৪১

বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান চিকিৎসক মাসুক এলাহীকে বলেন, আবরার মারা যাননি। তিনি ঘুমাচ্ছেন।

বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যা মামলায় সাক্ষী চিকিৎসক মাসুক এলাহী আদালতকে সেই রাতে তার অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। বলেছেন, মরদেহ ঢাকা মেডিকেলে নিতে বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল তাকে দফায় দফায় চাপ দেন।

রোববার ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দেন আলোচিত এই মামলার পঞ্চম সাক্ষী।

আবরারের মৃত্যুর পর চিকিৎসক মাসুক ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তিনি বুয়েট মেডিকেল সেন্টারে কাজ সহকারী প্রধান চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী বলেন, আবরারকে তিনি মৃত ঘোষণার পর সেখানে উপস্থিত সবাই চলে গেলেও আসেন মেহেদী হাসান নামে একজন। তিনি নিজেকে বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দিয়ে চিকিৎসককে বলেন, `আবরার মারা যায়নি, ঘুমাচ্ছে।'

এই চিকিৎসক জানান, তিনি সেদিন ২০ ঘণ্টা ডিউটি করেন। রাত ২ টা ৪৭ মিনিটে একজন ছাত্র অক্সিজেন নিয়ে যেতে বলেন। এক ও দ্বিতীয় তলার মাঝখানে আবরার ফাহাদকে শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পান।

‘তোষক এবং ট্রাউজার প্রস্রাবে ভেজা ছিল। প্রথম দর্শণেই তাকে আমার মৃত বলে মনে হয়’- আদালতকে বলেন আবরারদে দেখা চিকিৎসক।

বলেন, ‘যে লক্ষণগুলো দেখি সেগুলো মরে যাওয়ার লক্ষণ ছিল। তখন আমি ছাত্রদের বলি যে আবরার ফাহাদ মারা গেছে। তাকে আমি মৃত ঘোষণা করি।’

তখন সেখানে ২০ থেকে ২৫ জন ছাত্র উপস্থিত ছিলেন জানিয়ে চিকিৎসক জানান, তার কথা শোনার পর সবাই পালিয়ে যায়।

কিছুক্ষণ পর একজন ছাত্র এসে নিজের নাম বলে মেহেদী হাসান রাসেল। নিজের পরিচয় দেয় বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সেক্রেটারি হিসাবে।

‘সে আমাকে আবরারকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যেতে বলে। আমি বলি, সে বেঁচে নেই। মারা গেছে এবং তাকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে কোনো লাভ নেই। বরং তাকে আবরারকে পুলিশের কাছে হ্যান্ডওভার করি।’

‘তখন রাসেল আমাকে বলে যে, আবরার মারা যায়নি। সে ঘুমাচ্ছে। কিছুক্ষণ আগেও সে ঘুমাচ্ছিল। এ কথা বলে বারবার লাশ ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যেতে চাপ দিচ্ছিল।’

এরপর হলের প্রভোস্ট জাফর ইকবালকে ফোন নিয়ে আবরারের মৃত্যু সংবাদ জানান ওই চিকিৎসক।

জবানবন্দি দেয়ার পর কাঠগড়ায় দাঁড়ানো আসামিদের শনাক্ত করেন এই চিকিৎসক। পরে তাকে জেরা করা হয়।

সোমবার রাষ্ট্রপক্ষে ১৬৪ জবানবন্দি গ্রহণকারী হাকিমদের সাক্ষ্য নেয়া হবে।

গত ৫ অক্টোবর মামলাটির প্রথম সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়। চলবে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত।

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে পেটানো হয়। সেখানেই মারা যান তিনি। এই ঘটনার সন্দেহভাজন সবাই ছাত্রলীগের নেতাকর্মী।

 নিহতের বাবা বরকত উল্লাহ চকবাজার থানায় ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা ওয়াহিদুজ্জামান।

২৫ আসামির মধ্যে গ্রেফতার হয়েছেন ২২ জন।

১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

এ বিভাগের আরো খবর