চেক প্রত্যাখ্যান মামলায় বিনা দোষে জেল খাটতে থাকা বৃদ্ধ হাবিবুর রহমানকে মুক্তি দিয়েছে পটুয়াখালীর আদালত। পাশাপাশি একজন সম্মানিত ব্যক্তিকে হেনস্থা করার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশও দিয়েছে।
৮০ বছরের বৃদ্ধ হাবিবুর রহমানের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রতিকার ও তার মুক্তি চেয়ে রোববার দুপুরে পটুয়াখালীর প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে আবেদন করেন আইনজীবী এটিএম মোজাম্মেল হোসেন।
শুনানি শেষে বিকাল সোয়া চারটার দিকে বিচারক মোহাম্মদ আবুল বাসার মিয়া তাকে মুক্তি দেয়ার আদেশ দেন। মামলায় সাজাপ্রাপ্ত প্রকৃত আসামি নাহার গার্মেন্টসের মালিক হাবিবুর রহমানকে কারাগারে পাঠানোরও নির্দেশ দেন তিনি।
এর আগে নির্দোষ হাবিবুর রহমানকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। প্রকৃত আসামি হাবিবুর রহমানকেও একই সময়ে আদালতে হাজির করা হয়। শনিবার রাত ৯টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রোববার রাতের প্রথম প্রহরে নিউজবাংলায় পুলিশের ‘সরল বিশ্বাসে’ কারাগারে নির্দোষ বৃদ্ধ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে ভুল স্বীকার করে ও প্রকৃত আসামিকে ‘দৃশ্যত গ্রেফতার দেখানোর’ আবেদন জানিয়ে রোববার আদালতে আবেদনপত্র জমা দেয়া হয়।
প্রকৃত ঘটনা জানতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত দলও গঠন করেছে পটুয়াখালী জেলা পুলিশ।
গলাচিপা থানার ওসি মো. মনির হোসেন জানান, ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এএসআই আলামিনকে প্রত্যাহার করে পটুয়াখালী পুলিশ লাইনসে নেয়া হয়েছে।
বিকেলে আদালত বেরিয়ে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমি ৮ দিন বিনা বিচারে জেল খেটেছি। আমার সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। এর বিচার চাই।’
মামলার নথি অনুযায়ী, পৌর শহরের মুজিবনগর রোডের হাবিবুর রহমান ২০১২ সালে ব্র্যাক থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা ঋণ নেন। জামানত হিসেবে উত্তরা ব্যাংকের একটি চেক জমা দেন তিনি।
ঋণ পরিশোধ না করায় ব্র্যাক এই চেকটি ২০১৩ সালের ১০ এপ্রিল ব্যাংকে জমা দেয়। তবে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় তা প্রত্যাখ্যাত হয়।
২০১৩ সালের ১৯ মে হাবিবুরের বিরুদ্ধে মামলা করে ব্র্যাক। রায়ে আদালত তাকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও দুই লাখ ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
এরপরে প্রকৃত আসামিকে গ্রেফতার না করে শুধু নামের মিল থাকায় গত ৪ অক্টোবর দুপুরে বনানী এলাকার ৮০ বছরের বৃদ্ধ হাবিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ওই দিনই তাকে পটুয়াখালী কারাগারে পাঠানো হয়।
ভুল ব্যক্তিকে গ্রেফতার প্রসঙ্গে গলাচিপা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘সরল বিশ্বাসে এএসআই আল-আমিন তাকে গ্রেফতার করে।’