মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রজয়ের পর ব্লু ইকোনমির যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তা কাজে লাগাতে বাংলাদেশ প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতে চায় নরওয়ে।
রোববার শিল্প মন্ত্রণালয়ে শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের সঙ্গে দেখা করে এ আগ্রহের কথা জানান বাংলাদেশে নিযুক্ত নরওয়ের রাষ্ট্রদূত এসপেন রিকটার-ভেন্ডসেন।
এ সময় অন্যদের মধ্যে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব বেগম পরাগ উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, সমুদ্র সম্পদ আহরণে ঐতিহ্যগতভাবে নরওয়ের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা রয়েছে। এ অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ ব্যাপকভাবে লাভবান হতে পারে।
বৈঠকে বাংলাদেশের আর্থসামাজিক অগ্রগতিতে ব্লু ইকোনমির সম্ভাবনা কাজে লাগানোর কৌশল নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
এ ছাড়া শিপ রিসাইক্লিং, শিল্পের উন্নয়নে নরওয়ের কারিগরি সহায়তা, এ শিল্পে কর্মরত জনবলের প্রশিক্ষণ, সামুদ্রিক আবর্জনা ও শিল্পবর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সামুদ্রিক মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, আধুনিক প্রযুক্তিতে শুঁটকিমাছ সংরক্ষণসহ বিভিন্নি বিষয় আলোচনায় স্থান পায়।
বৈঠকে শিল্পমন্ত্রী বাংলাদেশে পরিবেশবান্ধব শিপ রিসাইক্লিং শিল্পের উন্নয়নে নরওয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিনের কারিগরি সহযোগিতার কথা তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, এর ফলে বাংলাদেশের জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প ক্রমেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করছে। তিনি এ শিল্পের শ্রমিক ও জনবলের দক্ষতা বাড়াতে নরওয়ে থেকে প্রশিক্ষক ও কারিগরি সহায়তা বাড়ানোর জন্য রাষ্ট্রদূতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
বাংলাদেশের বিশাল সমুদ্র সীমা ব্লু ইকোনমির বিরাট সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে মন্তব্য করে শিল্পমন্ত্রী বলেন, এর ফলে সমুদ্র সম্পদকেন্দ্রিক ব্যাপক শিল্প-কারখানা গড়ে তোলার সুযোগ হয়েছে। তিনি সামুদ্রিক মৎস্য আহরণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং ড্রাই ফিস শিল্পের প্রসারে নরওয়ের প্রযুক্তি সহায়তা কামনা করেন। একইসঙ্গে তিনি পরিবেশবান্ধব সবুজ শিল্পায়নের লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশে শিল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নরওয়ের সহায়তা অব্যাহত রাখার তাগিদ দেন।
নরওয়ের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের শিপ রিসাইক্লিং শিল্পের উন্নয়নে নরওয়ে বিগত দশ বছর ধরে সহযোগিতা করে আসছে। ফলে ইতোমধ্যে বাংলাদেশে এ শিল্পের ব্যাপক উন্নতি ঘটেছে। তিনি এ শিল্পের আধুনিকায়ন, সমুদ্র সম্পদ আহরণ, সামুদ্রিক মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, ড্রাই ফিস শিল্প স্থাপন এবং সমুদ্র ও শিল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় নরওয়ের কারিগরি ও প্রযুক্তিগত সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলে জানান।
শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে ইরানের রাষ্ট্রদূতের বৈঠক
এর আগে বাংলাদেশে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ রেজা নাফার শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে তার দপ্তরে সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎকালে তারা দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনা করেন।
ইরানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে শিল্পমন্ত্রী
এসময় ইরানের রাষ্ট্রদূত করোনা মহামারি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গৃহিত উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন। বলেন, চলমান মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক অর্জন প্রশংসনীয় ও অনুকরণীয়।
এসময় তিনি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেন।