কুষ্টিয়া শহর লাগোয়া গড়াই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধে ধস দেখা দিয়েছে। শেখ রাসেল কুষ্টিয়া-হরিপুর সংযোগ সেতুর ১০০মিটার ভাটিতে হরিপুর প্রান্তে ব্লক খুলে নদীতে চলে যাচ্ছে।
সেতুটি নির্মাণের জন্য ২০১৭ সালে এই প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর- এলজিইডি।
রোববার দুপুরে সরেজমিনে দেখা গেছে, এ পর্যন্ত ৪/৫ সারি ব্লক ধসে গেছে। প্রতিটি সারিতে ৫০টি ব্লক ছিল। এর একেকটির দৈর্ঘ্য, প্রস্থ ও উচ্চতা এক ফুট। সব মিলিয়ে দুই শ থেকে আড়াই শ ব্লক নদীতে চলে গেছে। ধসে যাওয়া ব্লকের ওপরের আরো এক সারিতে ফাটল ধরেছে।
স্থানীয় নির্মাণ প্রকৌশলী এম এ হাফিজ নিউজবাংলাকে বলেন, এটি সেতুর খুব কাছে হওয়ায় সেতু ও পাশের জনপদের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। তিনি বলেন, বাঁধ নির্মাণের সময় যেভাবে ঢালু করার কথা সেরকম করা হয়নি। এর পেট বরাবর (মাঝামাঝি) উঁচু। এ ছাড়া এ এলাকার অদূরেই বালু উত্তোলনের ড্রেজার (খননযন্ত্র) দেখা যায়।
প্রকৌশলী অভি বলেন, পানি কমে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা না করে এখনই মেরামতের পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
এ ব্যাপারে কথা হয় পানি উন্নয়ন বোর্ড, কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী পিযুষ কৃষ্ণ কুন্ডুর সঙ্গে। তিনি জানান, নদীতে এখন পানি কমছে। সেই সঙ্গে তীব্র স্রোত রয়েছে। এ কারণে বাধে ধস হতে পারে। তিনি এ অংশটি পরিদর্শন করেছেন।
প্রকৌশলী পিযুষ কৃষ্ণ কুন্ডু বলেন, ‘সেতু নির্মাণ করতে গিয়ে প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মাণ করেছিল এলজিইডি। তারাই ভালো বলতে পারবে কোনো নির্মাণ ত্রুটি ছিল কি না। তবে আমার মনে হয়েছে, বাঁধ নির্মাণের আগে জিও ব্যাগ ফেলে যে পরিমাণ প্রস্তুতি নেয়ার দরকার ছিল তাতে ঘাটতি থাকতে পারে।’
প্রকৌশলী পিযুষ কৃষ্ণ কুন্ডু বলেন, নদীর গতি পরিবর্তন করতে গেলে অনেক সময় এ ধরনের ধস বা ভাঙন দেখা দেয়। তিনি এটাকে বড় কোনো হুমকি মনে করেন না। তিনি আরও বলেন, প্রতিদিনই পানি কমছে নদীতে। এসময়ে একটু ভাঙন হয়। পানি নেমে গেলে ওই অংশ আবার ঠিকমতো মেরামত করা যাবে।
এলজিইডি, কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলীর দপ্তরে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। সেখান থেকে জানানো হয় তিনি অসুস্থ।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলা প্রকৌশলী জহুরুল ইসলামের সঙ্গে মোবাইল ফোনে কথা হয়। তার অফিসের কয়েকজন স্টাফ ধসে যাওয়া স্থান দেখে এসেছেন বলে জানান। তিনি বলেন, ‘বাইরে অন্য কাজে আছি। পরে গিয়ে দেখে আসব। ছবি তুলে ঊর্ধ্বতনদের জানাব।’
এ ব্যাপারে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মো: আসলাম হোসেন বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এলজিইডি উভয়কেই নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। সেতুটি যাতে কোনো প্রকার ক্ষতির মুখে না পড়ে সে ব্যাপারটি নিশ্চিত করা হচ্ছে।