গাইবান্ধায় ঘরে ঢুকে গলায় ছুরি ঠেকিয়ে বিধবাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। আবার এই ঘটনায় মামলা করায় তাকে ঘরছাড়া হতে হয়েছে।
মামলা করতে গিয়ে হয়রানির শিকার হওয়ার কথা জানিয়েছেন ওই নারী। পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ মামলা নেয়নি, পরে নিয়েছে আদালত। এরপর থেকেই শুরু হয় আসামিদের হুমকি। আর প্রাণ বাঁচাতে ভিটেমাটি ছাড়েন তিনি।
পুলিশ অবশ্য মামলা না নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তাহলে কেন ওই নারীকে আদালতে মামলা করতে হলো, সে বিষয়ে জবাব মেলেনি।
ঘটনাটি ঘটেছে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কুপতলা ইউনিয়নে।
বুধবার ওই নারী জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ তিন জনের নামে মামলা করেন। প্রধান আসামি করা হয় হারুন মিয়া ওরফে বদু মিয়াকে। তার ভাতিজা মঞ্জু মিয়া ও নাতি আল-আমিনের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ।
মামলার বিবরণে বলা হয়েছে, ঘরে কেউ না থাকার সুযোগে বদু মিয়া অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ধর্ষণ করেন। ভুক্তভোগীর চিৎকারে প্রতিবেশীরা এসে অভিযুক্তকে হাতেনাতে আটকের পর বেঁধে রাখে।
ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে মীমাংসার প্রস্তাব করেন মঞ্জু মিয়া ও আল-আমিন। রাজি হননি ওই নারী। পরে প্রধান আসামিকে কৌশলে পালানোর সুযোগ করে দেন মঞ্জু ও আল আমিন।
গ্রাম আদালত বিচার না পেয়ে ওই নারী যান গাইবান্ধা সদর থানায়। সেখানে মামলা না নেয়ায় যান আদালতে।
মামলা না নেয়ার অভিযোগ অবশ্য স্বীকার করেননি গাইবান্ধা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খান মো. শাহরিয়ার। তার দাবি, ওই নারী থানায় আসলেও লিখিত অভিযোগ না করে আদালতে মামলা করেছেন।
‘অথচ দোষ দেয়া হচ্ছে পুলিশকে। এটা একটা সাধারণ প্রবণতায় পরিণত হয়েছে’- বলেন ওসি।
মামলাটি ট্রাইব্যুনাল-১ থেকে জেলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কার্যালয়ে তদন্তের জন্য যাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।
ওই নারীর ছেলে জানান, আদালতে মামলার পর থেকে অভিযুক্তদের হুমকি আর হত্যার ভয়ে তারা মা-ছেলে বাড়ি ছেড়ে নানার বাড়িতে অবস্থান করছেন।
বাদীর আইনজীবী তাছনিম বেগম মিলা বলেন, ‘আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছে। আমার বিশ্বাস সুষ্ঠু তদন্ত হলে ওই নারী ন্যায়বিচার পাবেন।‘
গাইবান্ধা পিবিআই এর পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক নিউজবাংলাকে জানান, ‘সাধারণত আদালতে হওয়া মামলাগুলো পিবিআই-এ আসতে সপ্তাহ খানেক সময় লাগে। মামলাটি হাতে পেলে গুরুত্ব নিয়ে তদন্ত করব।‘