নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, ‘দেশের সর্বোচ্চ আদালত অঙ্গনে অনিয়ম, দুর্নীতি কোনোভাবে প্রশ্রয় দেয়া হবে না। দুর্নীতি, অনিয়মের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থানে যাব।’
নিয়োগ পাওয়ার পর রোববার (১১ অক্টোবর) অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে অফিস শুরু করছেন এ এম আমিন উদ্দিন।
এর একদিন আগে শনিবার রাজধানীর আজিমপুরে নিজ চেম্বারে নিউজবাংলাকে একান্ত সাক্ষাৎকার দেন তিনি।
আদালত অঙ্গনকে দুর্নীতি ও অনিয়মমুক্ত রাখতে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় এবং সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির মধ্যে সমন্বয়ের প্রতিশ্রুতিও দেন এ এম আমিন উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিটি অনিয়ম, দুর্নীতি খুঁজে বের করব। অনিয়ম, দুর্নীতি দূর করার ব্যবস্থা করব।’
অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে কাজের শুরুতে কী পরিকল্পনা- এমন প্রশ্নে সরাসরি কোনো জবাব দেননি তিনি। বলেন, ‘অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসে কাজ শুরুর আগে আইনজীবী বন্ধু, অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসের আইন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে কর্মপন্থা নির্ধারণ করে কাজ শুরু করব।’
বার কাউন্সিল পরীক্ষা ঝুলে থাকার বিষয়ে তার জবাব, ‘দেখেন বিষয়টি আমি তো জানি না। তবে শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করছেন সেটা জানি। পরীক্ষা না হওয়ার পেছনে বার কাউন্সিলের কিছু যৌক্তিক সমস্যা আছে।
‘এই মুহূর্তে তো দুনিয়ার কোথাও পরীক্ষা হচ্ছে না। এটা একটি বৈশ্বিক সমস্যা। তবে সমস্যাটা কীভাবে দূর করা যায়- সে বিষয়ে বার কাউন্সিলের কর্মকর্তা, এনরোলমেন্ট কমিটিতে যারা আছেন তাদের সঙ্গে বসে সমাধানের চেষ্টা করব।’
পিলখানা হত্যা মামলা, যুদ্ধাপরাধ মামলা, ২১ আগস্ট মামলা, সাত খুন মামলাসহ আলোচিত মামলাগুলো দ্রুত শুনানিতে ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতিও দেন নতুন অ্যাটর্নি জেনারেল।
প্রয়াত অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘সততা, দক্ষতা দিয়ে তিনি অ্যাটর্নি জেনারেল অফিসকে যে উচ্চতায় নিয়ে গেছেন, আমি চেষ্টা করব সেটি ধরে রেখে আরো এগিয়ে যেতে।’
সংবিধান অনুযায়ী, অ্যাটর্নি জেনারেল রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা। তিনি দেশের সব আদালতে শুনানি করতে পারেন। বিচার বিভাগ, নির্বাহী বিভাগ ও আইন বিভাগের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল।
গত ২৭ সেপ্টেম্বর মাহবুবে আলমের মৃত্যুর পর অ্যাটর্নি জেনারেল পদটি খালি হয়। এরপর ৮ অক্টোবর সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিনকে এ পদে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
এ এম আমিন উদ্দিন ১৯৬৩ সালের ১ অক্টোবর মৌলভীবাজার জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি ঢাকা সিটি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৮২ সালে তিনি সেন্ট্রাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি পাস করেন।
১৯৮৭ সালে আইনজীবী তালিকাভুক্ত হন এ এম আমিন উদ্দিন। এর পর ১৯৮৯ সালের ২৮ অক্টোবর সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে এবং ২০০৩ সালে আপিল বিভাগে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
২০১৯-২০২০ মেয়াদে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি। এরপর ২০২০-২০২১ মেয়াদেও তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি আইনজীবী সমিতির সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।