যশোরে বাসে তরুণীকে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি মনিরুল ইসলাম মনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শনিবার বিকেলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রহমানের আদালতে তিনি ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দেন।
এদিকে ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার পর ওই নারীকে ভেকুটিয়ার ভিকটিম শেল্টার হোমে (আশ্রয় কেন্দ্র) পাঠানো হয়েছে।
মনিরুল ইসলাম মনি (২৮) ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কাশিমপুর গ্রামের ওহিদুলের ছেলে ও এমকে পরিবহনের চালকের সহকারী। তিনি যশোর সদর উপজেলার রামনগর ধোপাপাড়ায় একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন। তার এক কন্যা সন্তান রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শেখ আবু হেনা মিলন বলেন, ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি মনিরুলসহ সাত আসামিকে শনিবার আদালতে সোপর্দ করা হয়। মনিরুল ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন। পরে সাত আসামিকে কারাগারে পাঠানো হয়।
ধর্ষণের ঘটনায় শুক্রবার রাতে ওই তরুণী কোতোয়ালি থানায় সাত জনের নামে মামলা করেন। তার বাড়ি যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলায়। রাজশাহীর একটি ক্লিনিকে আয়ার চাকরি করেন তিনি।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বাদী (তরুণী) ছুটিতে বাড়ি আসার সময় সাধারণত এমকে পরিবহনের বাসে চড়েন। সেই সুবাদে ওই পরিবহনের একটি বাসের চালকের সহকারী মনিরুল ইসলাম ওরফে মনিরের সঙ্গে পরিচয় হয়। মাঝেমধ্যে তাদের মোবাইল ফোনে কথাও হতো। বৃহস্পতিবার নিজ বাড়িতে যাওয়ার জন্য রাজশাহী থেকে এমকে পরিবহনের বাসে চড়েন। গাড়িতে বসে মোবাইল ফোনে মনিরুলের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাকে যশোরের মনিহার মোড়ে নামতে বলেন মনিরুল।
এজাহারে আরও বলা হয়, মনিরুলের কথামতো বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক ১১ টার দিকে মনিহার মোড়ে নামার পর সেখানে একটি হোটেলে একসঙ্গে তারা খাওয়া-দাওয়া করেন। বাদী রাতে তাকে বাড়ি পৌঁছে দিতে মনিরুলকে অনুরোধ করেন। মনিরুল এমকে পরিবহনের বাসের মাধ্যমে নিউমার্কেটে নিয়ে গাড়িতে উঠিয়ে দেয়ার কথা বলেন। ওই তরুণী মনিরুলের সঙ্গে যশোর শহরের বকচর কোল্ডস্টোরের পাশে রাখা এমকে পরিবহনের বাসের ভেতরে যান। সেখানে রাত ১টার দিকে তাকে ধর্ষণ করেন মনিরুল।
বাদী আরও অভিযোগ করেন, রাত দেড়টার দিকে আসামি রাকিবুল ইসলাম রাকিব, মঈনুল ইসলাম মঈন, কাজী মুকুল, শাহীন আহমেদ জনি, সুভাষ সিংহ ও কৃষ্ণ বিশ্বাস এসে গাড়ির দরজা ধাক্কাধাক্কি ও গালাগাল করেন। একপর্যায়ে মনিরুল গাড়ির দরজা খুলে দেন। বাদী বের হতে চাইলে আসামিরা তাকে আটকে রাখেন। আসামি রাকিবুল, মঈনুল ইসলাম ও কাজী মুকুল বাসে উঠে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। তিনি চিৎকার-চেঁচামেচি করলে অন্য আসামিরা মিলে তাকে ও মনিরুলকে কিল-ঘুষি ও লাঠি দিয়ে মারতে থাকেন। তারা ব্যাগে থাকা ৫ হাজার টাকা চুরি করে নেয়। এক পর্যায়ে আশপাশের লোকজনে এগিয়ে আসে। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।