বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ধর্ষণবিরোধী সমাবেশে ৯ দাবি

  •    
  • ৯ অক্টোবর, ২০২০ ২০:২৪

ধর্ষণ ও নারী নিপীড়নে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ, তদন্ত চলাকালে মানসিক নিপীড়ন বন্ধ করার ডাক

রাজধানীতে ধর্ষণবিরোধী এক সমাবেশে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ, ধর্ষণে জড়িতদের শাস্তিসহ নয় দফা দাবি জানানো হয়েছে। ঘোষণা করা হয়েছে সাত দিনের কর্মসূচি।

‘ধর্ষণ ও বিচারহীনতার বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ শিরোনামে শুক্রবার বিকালে রাজধানীর শাহবাগে সমাবেশ থেকে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারী নির্যাতনের ঘটনায় ধর্ষণের সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড করার দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভ চলছে। সরকার এই দাবিতে সায় দিয়ে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে।

যত দাবি

১. ধর্ষণ ও নারীর প্রতি সহিংসতায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। ‘ধর্ষণ, নিপীড়ন বন্ধ ও বিচারে ব্যর্থ’ স্বরষ্ট্রমন্ত্রীকে অবিলম্বে অপসারণ করতে হবে।

২.পাহাড়ে সমতলে আদিবাসী নারীদের উপর যৌন ও সামাজিক নিপীড়ন বন্ধ করতে হবে।

৩. সব প্রতিষ্ঠানে নারী নির্যাতনবিরোধী সেল কার্যকর করতে হবে। সিডো সনদে বাংলাদেশকে স্বাক্ষর ও তার পূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে। নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক সব আইন ও প্রথা বিলোপ করতে হবে।

৪. ধর্মীয়সহ সকল ধরনের সভা-সমাবেশে নারীবিরোধী বক্তব্য শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে হবে। সাহিত্য, নাটক, সিনেমা, বিজ্ঞানে নারীকে পণ্য হিসেবে উপস্থাপন বন্ধ করতে হবে। পর্নোগ্রাফি নিযন্ত্রণে বিটিসিএল এর কার্যকরী ভূমিকা নিতে হবে।

৫. তদন্ত চলাকালে ভুক্তভোগীকে মানসিক নিপীড়ন-হয়রানি বন্ধ করতে হবে। তার আইনি ও সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

৬. অপরাধ বিজ্ঞান ও জেন্ডার বিশেষজ্ঞদের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ট্রাইব্যুনালের সংখ্যা বাড়িয়ে ঝুলে থাকা মামলা দ্রুত শেষ করতে হবে।

৭. ধর্ষণ মামলার ক্ষেত্রে সাক্ষ্য আইন ১৮৭৯-১৫৫ (৪) ধারাকে বিলোপ করতে হবে এবং মামলার ডিএনএ আইনে সাক্ষ্য প্রমাণের ক্ষেত্রে কার্যকর করতে হবে।

৮. পাঠ্যবইয়ে নারীর প্রতি অবমাননা ও বৈষম্যমূলক প্রবন্ধ, নিবন্ধ, পরিচ্ছেদ, ছবি, নির্দেশনা ও শব্দচয়ন বাদ দিতে হবে।

৯. গ্রামীণ সালিশে ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য হতে হবে।

চলমান বিক্ষোভের অংশ হিসেবে এই সমাবেশটি ডাকা হয়। সাধারণ শিক্ষার্থী, বামপন্থী ছাত্র সংগঠনের কর্মী ও শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আহ্বান করা কর্মসূচিতে যোগ দেন নানা শ্রেণিপেশার মানুষ।

বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর গণসংগীতের মধ্য দিয়ে মহাসমাবেশ শুরু হয়। পরিবেশন করা হয় কবিতা আবৃত্তি, পথনাটক।

সমাবেশ ঘোষণা দেয়া হয় শাহাবাগ জাদুঘরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি প্রতিদিন বিকাল চারটা থেকে রাত পর্যন্ত চলবে।

সভাপতির বক্তব্যে ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক অনিক রায় বলেন, 'সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি করা হবে বলে আইনমন্ত্রী বলছেন। কিন্তু আইন করে অপরাধ দমন করা যায় না, কখনও যায়নি। সংস্কৃতি বদলাতে হবে।

সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, ‘যারা ধর্ষণের সঙ্গে যুক্ত তারা ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত দেখা যাচ্ছে।’ বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নারী সেলের সদস্য জলি তালুকদার বলেন, ‘প্রত্যেক ধর্ষণের, হত্যার বিচার হতে হবে।’

নারী সংহতির দপ্তর সম্পাদক নাসরিন আকতার বলেন, ‘সরকার নারীর নিরাপত্তা দিতে পারেনি। কিন্তু দিতে হবে।’

সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা লিয়াকত আলী বলেন, ‘রাজনৈতিক, রাষ্ট্র, শাসন ব্যবস্থা অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়, এ থেকে মুক্তি দরকার।’

যুব ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক খান আসাদুজ্জামান বলেন, ‘ধর্ষণের বিচারে কেন হাইকোর্টের আদেশ লাগে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, আনু মুহাম্মদ, সামিনা লুৎফা,  গীতিআরা নাসরিন, জে্যাতির্ময় বড়ুয়া, কাবেরী গায়েন প্রমুখ সমাবেশে সংহতি প্রকাশ করেন।

কর্মসূচি

সমাবেশে সাত দিন ব্যাপী কর্মসূচির ঘোষণা দেয়া হয়। এর মধ্যে আছে: ১১ থেকে ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত ধর্ষণবিরোধী আলোকচিত্র প্রদর্শনী, সাংস্কৃতিক সমাবেশ, চলচ্চিত্র উৎসব, নারী সমাবেশ, সাইকেল র‌্যালি, বেগমগঞ্জের উদ্দেশে লংমার্চ এবং বেগমগঞ্জে সমাবেশ।

এ বিভাগের আরো খবর