সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদের বহিষ্কৃত আহ্বায়ক হাসান আল মামুন ও ডাকসুর সদ্যবিদায়ী ভিপি নুরুল হক নুরুদের বিরুদ্ধে মামলার বাদী অনশনের দ্বিতীয় দিনে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
মামলার দুই সপ্তাহেও আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষুব্ধ বাদী প্রশ্ন তুলেছেন, ব্যবস্থা নিতে হলে বেগমগঞ্জের মতো ভিডিও ভাইরাল হতে হবে কি না।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বৃহস্পতিবার রাত থেকে অবস্থান নিয়ে অনশন করছেন বাদী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ছাত্রীর অনশনে সংহতি জানিয়েছেন বেশ কয়েকজন নারী।
অনশনের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার বিকাল চারটার দিকে অনশনস্থলে গিয়ে বাদীকে এক নারীর কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে থাকতে দেখা যায়।
জানান, না খেয়ে তিনি দুর্বল হয়ে গেছেন। কষ্ট হচ্ছে অনেক। তবে ব্যবস্থা না নেয়া পর্যন্ত তিনি খাবার মুখে তুলবেন না।
নিউজবাংলাকে এই তরুণী বলেন ‘আমিও ঠায় বসে থাকব। এখানেই মারা যাব। তাও আমার দাবি আদায় না করে আমি যাব না।’
বেগমগঞ্জের ঘটনা উল্লেখ করে তরুণী বলেন, ‘নোয়াখলীর ঘটনা ভাইরাল হয়েছে বলে সারাদেশে তোলপাড় চলছে। তারা ন্যায়বিচার পাবে। তাহলে ন্যায়বিচারের জন্য কি ভাইরাল হতে হবে?’
‘আমি মামলা করেছি সেই কবে, এখনো পুলিশ অপরাধীদের ধরতে পারছে না। অথচ মূল আসামি মামুন ফেসবুকে নিয়মিত পোস্ট দিচ্ছে। বাকিরা ধর্ষণবিরোধী আন্দোলন করে বেড়াচ্ছে।’
‘কাল রাত থেকে অবস্থান করতে গিয়ে আমি অসুস্থ হয়ে পড়েছি। কেউ তো আমাকে নিয়ে কথা বলছে না।‘
এই প্রতিবাদে সংহতি জানিয়ে সেখানে অবস্থান নিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি বিষয়ক উপসম্পাদক তিলোত্তমা শিকদারসহ ২১ ছাত্রী।
এ সময় তারা ‘ধর্ষণের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড’, ‘ধর্ষকের কোনো দল নাই’, ‘দ্রুত বিচারের ব্যবস্থা হোক’, ‘অপরাধীদের শীঘ্রই গ্রেফতার করা হোক’ লেখা ব্যানার প্রদর্শন করেন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর, ২২ সেপ্টেম্বর এবং ২৩ সেপ্টেম্বর মামুন, নুর ও তাদের চার সহযোগীর বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেন এই তরুণী। এতে অভিযোগ করা হয়, হাসান আল মামুন তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেছেন।
নুরের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি মীমাংসা করার কথা বলে কথা রাখেননি। পরে বলেছেন, চুপ হয়ে যেতে। নইলে সামাজিক মাধ্যমে ‘পতিতা’ বলে প্রচার চালাবেন।
দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় পার হলেও পুলিশ কোনো আসামি গ্রেফতার করেনি। এর মধ্যে গত ৪ অক্টোবর গ্রেফতারের আবেদন নিয়ে আদালতে যান বাদী। বিচারক বলেছেন, পুলিশ চাইলে আসামিদের গ্রেফতার করতে পারে।
লালবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আশরাফ উদ্দিন নিউজবাংলাকে বলেছেন, মামলা হলেই বিবাদীকে গ্রেফতার করতে হবে, এমন কোনো বিধান নেই।
কোতয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান বলেন, তার থানায় করা মামলায় প্রধান আসামি নাজমুল হাসান সোহাগকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
৫ আসামি প্রকাশ্যে না থাকলেও নুর নিয়মিত বিভিন্ন কর্মসূচিতে আসছেন, সংবাদমাধ্যমের সামনে কথাও বলছেন।