প্রায় তিন দশক পর তদন্ত শেষ করা আলোচিত সগিরা হত্যা মামলায় বিচার শুরুর আদেশ আসেনি। নতুন তারিখ পড়েছে ৯ নভেম্বর।
বুধবার এই মামলায় অভিযোগ গঠন করার কথা থাকলেও তা হয়নি। মামলাটি চলছে মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশের আদালতে।
আইনজীবীর অসুস্থতার কারণে ‘মানবিক কারণে’ আদেশ পিছিয়ে বিচারক বলেছেন, ‘আমি অভিযোগ গঠনের আদেশ দিতে পারলাম না, বিচারের দিকে এগোতে পারলাম না।’
আসামি হাসান আলী চৌধুরী (৭০), তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহিন (৬৪) ও আনাস মাহমুদের (৫৯) আইনজীববী মোশাররফ হোসেন কাজল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি। এই যুক্তি দেখিয়ে আসামিপক্ষ থেকে সময় আবেদন করা হয়।
এর আগেও আইনজীবী কাজল আদালত থেকে সময় নিয়েছিলেন। তখন বিচারক শুনানির জন্য তার লিখিত প্রতিশ্রুতি নিয়েছিলেন।
দুইপক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে আগামী ৯ নভেম্বর আবার শুনানি ও অভিযোগ গঠনের বিষয়ে আদেশ দেয়ার কথা জানান বিচারক।
আগের তারিখ গত ২৩ সেপ্টেম্বরে আসামি মারুফ রেজা (৫৯) ঘটনার সময় শিশু ছিলেন দাবি করে তার বিচার শিশু আদালতে স্থানান্তরের আবেদন করেছিলেন। এই আবেদনের ওপর এদিন শুনানি নেন বিচারক।
নাসের বলেন, ‘ঘটনার সময় মারুফের বয়স ছিল ১৬ বছর ১০ মাস ২৬ দিন।’
বিচারক বলেন, ‘১৯৮৯ সালের ঘটনার সময় আইন অনুযায়ী মারুফ শিশু ছিলেন না।’
‘আমি আপনার কথা মানলাম না। আই ডু নট এগ্রিড উইথ ইউ।’
অভিযোগের দায় থেকে আসামি মন্টু ওরফে মিন্টু মণ্ডলের অব্যাহতি চান তার আইনজীবী।
বিচারক বলেন, ‘আগের অভিযোগপত্রেও তার নাম ছিল।’
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘আপনি খালাস পেলে পেতে পারেন। কিন্তু এ মুহূর্তে অব্যাহতি পেতে পারেন না।’
বাদী সাগিরা মোর্শেদের স্বামী আব্দুস সালামের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও ঢাকা মহানগর দায়রা আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌসুঁলি আবদুল্লাহ আবু, অতিরিক্ত কৌঁসুলি তাপস পাল উপস্থিত ছিলেন।
১৯৮৯ সালের ২৫ জুলাই সগিরা মোর্শেদ সালাম ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী রোডে ছিনতাইকারীদের গুলিতে মারা যান।
৩১ বছর পরে সগিরার ভাসুর ডা. হাসান আলী চৌধুরী, তার স্ত্রী সায়েদাতুল মাহমুদা শাহিন, শাহিনের ভাই আনাছ মাহমুদ রেজওয়ান ও মো. মারুফ রেজা হত্যায় সম্পৃক্ততা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।
পুলিশের তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টেগেশনের (পিবিআই) প্রধান বনজ কুমার মজুমদার বলেছেন, স্ত্রীর কথায় প্ররোচিত হয়ে ছোট ভাইয়ের বউকে শায়েস্তা করার জন্য ২৫ হাজার টাকায় ‘সন্ত্রাসী’ মারুফ রেজাকে ভাড়া করেন ডা. হাসান। মারুফকে সহযোগিতার জন্য স্ত্রীর ভাই রেজওয়ানকে দায়িত্ব দেন।
দীর্ঘ চড়াই-উৎরাই শেষে এখন মামলাটি পুনঃতদন্তের মাধ্যমে আদালতে এসেছে।