নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নির্যাতিতা নারী ও তার পরিবারকে নিরাপত্তা দিতে নোয়াখালীর পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া নির্যাতনের ভিডিওটি সরিয়ে দিতে বিটিআরসিকেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ভিডিওর কপি সিডি বা পেনড্রাইভে করে আদালতকে জমা দিতে হবে।
দুই জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীর আবেদনের পর সোমবার বিচারপতি মো.মজিবুর রহমান মিয়া এবং বিচারপতি মহি উদ্দিন শামীমের বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আগের দিন ফেসবুকে ফাঁস হয় ভিডিওটি। এর ৩২ দিন আগে ২ সেপ্টেম্বর বাড়িতে ঢুকে ওই নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন কয়েকজন।
এই ঘটনায় সাত জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী নারী। আর প্রধান আসামিসহ চার জনকে পুলিশ ও র্যাব গ্রেফতার করেছে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে।
আইনজীবীরা এই ঘটনাটিকে মানবতার উপর জঘন্যতম অপরাধ বলে উল্লেখ করেন। বলেন, এই ঘটনায় জাতির মর্যাদাহানি হয়েছে। আদালত যেন দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।
পরে আদালত ফৌজদারি মামলার সবশেষ অবস্থা জানিয়ে ২৮ অক্টোবর প্রতিবেদন দিতে বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়।
ভুক্তভোগীর বক্তব্য গ্রহণে পুলিশের কোনো অবহেলা আছে কি না তা অনুসন্ধান করতে একটি কমিটিও করে দিয়েছে আদালত।
নোয়াখালীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা সমাজসেবা অফিসার এবং চৌমুহনী সরকারি এস এ কলেজের অধ্যক্ষকে ১৫ দিনের মধ্যে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রারের কাছে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আদালত রুলও জারি করেছে। এতে ভুক্তভোগী নারীকে রক্ষা এবং দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে অবহেলার কারণে বেগমগঞ্জের ওসি ও বেগমগঞ্জ থানার কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে স্বরাষ্ট্র সচিব, নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক ও বেগমগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে সকালে বেগমগঞ্জের ঘটনায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না, আব্দুল্লাহ আল মামুন।
তারা ছাড়াও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এবং আব্দুল্লাহ আল মামুন এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান।
আইনজীবী ইয়াদিয়া জামান, জামিউল হক ফয়সাল, রাশিদা চৌধুরী নিলু, তানজীম আল ইসলামও এ সময় বক্তব্য রাখেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ রাসেল চৌধুরী।