নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে উত্তরায় প্রায় দুই ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা।
সোমবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ‘আমরাই বাংলাদেশ আমরাই রুখবো ধর্ষণ’ ব্যানারে আন্দোলনে নামেন উত্তরা এলাকার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রথমে আজমপুরে তারা অবস্থান নেন। এরপর তারা আসেন মাস্কটপ্লাজার সামনে।
বেগমগঞ্জের ঘটনার শাস্তির পাশাপাশি প্রায়ই ঘটা ধর্ষণেরও তীব্র নিন্দা জানান তারা। তুলে ধরা হয় নানা দফা দাবি। বেলা দেড়টার দিকে সড়ক ছেড়ে দিলেও মঙ্গলবার সকালে আবার জমায়েত হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
দাবিগুলো হলো: ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড করা, দ্রুত বিচার ট্রাইবুনাল গঠন করে সর্বোচ্চ ৬০ কার্যদিবসের মধ্যে বিচার শেষ করা, নির্যাতিতার বিনামূল্যে চিকিৎসা এবং পরিবারকে ক্ষতিপূরণ প্রদান; জেলায় জেলায় ধর্ষণ প্রতিরোধে পুলিশের আলাদা টাস্কফোর্স গঠন; নির্জন রাস্তায় সিসি ক্যামেরা স্থাপন; ছয় মাসের মধ্যে আগের সব ধর্ষণ মামলার রায় নিশ্চিত করা এবং দলীয় মদদ দেয়া হলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ।
আনাস নামে একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা দেখছি। কিন্তু সুষ্ঠ বিচার হয় না। বিচারের দাবিতে আমরা রাস্তায় নেমেছি। আমরা ধর্ষকদের ফাঁসি চাই।’
আন্দোলকারীদের একজন লাবিব। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের মা বোনদের নিরাপত্তার দাবিতে রাস্তায় নেমেছি। যতদিন আমাদের দাবি মেনে নেয়া না হবে ততদিন আমরা রাস্তায় থাকব।’ বেগমগঞ্জে নারী নির্যাতনের প্রতিবাদে উত্তরায় ছাত্র বিক্ষোভে দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে। ছবি: আলভী নাভিদ
গত ২ সেপ্টেম্বর বেগমগঞ্জে এক গৃহবধূর ঘরে ঢুকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে স্থানীয় কয়েকজন যুবক। ৩২ দিন পর গত রোববার সে ভিডিও সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হয়।
এই ঘটনায় নির্যাতিত গৃহবধূ নারী নির্যাতন এবং পর্নোগ্রাফি আইনে দুটি মামলা করেছেন। এতে সাত জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত পুলিশ ও র্যাব গ্রেফতার করেছে চারজনকে, যাদের মধ্যে আছেন প্রধান আসামি বাদল ও দেলোয়ার।
ঘটনাটি ফাঁস হলে তীব্র প্রতিক্রিয়া হয়েছে। বিষয়টি নজরে এসেছে উচ্চ আদালতেরও। উত্তরার পাশাপাশি বিক্ষোভ হয়েছে রাজধানীর শাহবাগ এলাকাতেও।