নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী মামলায় জানিয়েছেন, তাকে নির্যাতনের ভিডিওটি ধারণ করে তাকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টা করা হয়। বলা হয়, কুপ্রস্তাবে রাজি না হলে ভিডিওটি ফেসবুকে ফাঁস করে দেয়া হবে। পরে তাই করা হয়েছে।
এই ঘটনায় বেগমগঞ্জ থানায় গত রাতে মামলা করেন ভুক্তভোগী নারী। মামলা হয়েছে দুটি। একটি নির্যাতনের ঘটনায় এবং একটি পর্নগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে।
এতে সাত জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, তারা নয় জনকে চিহ্নিত করেছেন।
যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তারা হলেন: বাদল, রহিম, আবুল কালাম, ইসরাফিল, সাজু, সামশুদ্দিন সুমন, আবদুর রব চৌধুরী ওরফে লম্বা চৌধুরী, আরিফ রহমতউল্লাহ।
মামলায় বলা হয়, ঘটনার পর ভুক্তভোগী তার বাড়ি ছেড়ে পাশের উপজেলায় বোনের বাড়িতে বসবাস করতে থাকেন।
ঘটনাটি ফাঁস হলে ওই নারীকে খুঁজে বের করে পুলিশ। তিনি পুরো ঘটনা খুলে বলেন। এবং আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে পরামর্শ করে মামলার সিদ্ধান্ত নেন।
ওই নারী জানান, তার স্বামী দীর্ঘদিন পর তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বাড়ি আসে। ২ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক নয়টায় দিকে তাদের ঘরের দরজা ভেঙে হানা দেয় আসামিরা।
স্বামীকে পাশের ঘরে বেঁধে রেখে তাকে নিয়ে টানা হ্যাচরা করতে থাকে। তারা ধর্ষণের চেষ্টাও করে।
এক পর্যায়ে কাপড় খুলে ফেলে মোবাইল ফোনের লাইট জ্বেলে ভিডিও ধারণ করা। হয়। তিনি উচ্চস্বরে চিৎকার করলে আশেপাশের লোকজন এগিয়ে আসে।
‘আসামিরা আমাকে হুমকি দেয় যে, যদি এই ঘটনা কারো কাছে প্রকাশ করি, আমাকে প্রাণে হত্যা করা হবে’- মামলায় বলেন ভুক্তভোগী নারী। আর এ কারণে তিনি প্রাণভয়ে কাউকে কিছু না বলে বোনের বাড়ি চলে যান।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন জানান, তারা আসামিদের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করবেন আদালতে। আর দ্রুত প্রতিবেদন দেয়ার চেষ্টা করবেন।
ঘটনার ৩২ দিন পর রোববার ভিডিওটি ফেসবুকে ছেড়ে দেয়া হয়। মুহূর্তেই সেটি ভাইরাল হয়ে গেলে নিন্দার ঝড় উঠে। বেগমগঞ্জ থানাকে ব্যবস্থা নিতে তাৎক্ষণিক নির্দেশ দেন এসপি আলমগীর।
ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ একজনকে ধরে নিয়ে আসে। কিন্তু পাওয়া যায়নি ভুক্তভোগীকে। পরে তাকে খুঁজে বের করে থানায় নিয়ে আসে।
রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রধান আসামিসহ দুই জনকে গ্রেফতার করে র্যাব।
ঘটনাটি হাইকোর্টের নজরে এনেছে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন দুই জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী।