লালমনিরহাট জেলা প্রশাসকের রেকর্ড রুমের ভলিয়ম বই থেকে জমির আসল এস.এ খতিয়ানের পাতা গায়েবের ঘটনা ঘটেছে। এরপর ভুঁয়া খতিয়ানের মাধ্যমে জেলার পাটগ্রামের রসুলগঞ্জ কোটতলীর একখণ্ড জমির ভুয়া দলিল করা হয়েছে। এখন ওই জমির মালিকানা দাবি করে প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা কাদের এলাহী লাভলু তা দখলের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, লালমনিরহাটের পাটগ্রাম পৌরসভার কোটতলীতে মৃত সফিয়ার রহমানের স্ত্রী লতিফা বেগম তার ২২শতক জমিতে দুই মেয়েসহ বসবাস করেন।
লতিফা বেগমের দাবি, কাদের এলাহী লাভলু ওই জমি হাতে পাওয়ার জন্য কুট-কৌশলের আশ্রয় নিয়েছেন। তার ভাষ্যমতে, রসুলগঞ্জের ৪০৪ নং খতিয়ানটি পরিবর্তন করেন লাভলু । আসল ৪০৪ এস.এ খতিয়ানে ৭ জন ওয়ারিশ ছিল। কিন্তু এর পর আসল খতিয়ান সরিয়ে নকল খতিয়ানে আরও একটি নাম যোগ করে ওই জমির ওয়ারিশ ৮ জনকে বানানো হয়। ৮নম্বর ওয়ারিশ হিসেবে রাম দাস বাবুর নাম সংযুক্ত করা হয়। পরে তার ওয়ারিশ হিসেবে তার স্ত্রী শুশিলা দাসের থেকে জমি ক্রয় করার কথা বলছেন কাদের এলাহী লাভলু।
জেলা প্রশাসকের ভুমি রেকর্ড রুম, পাটগ্রাম উপজেলার ভূমি অফিস ও সেটেলমেন্ট অফিসের কর্মকতাদের যোগসাজশে এমন কাজ করা হয়েছে বলে অভিযোগ লতিফা বেগমের।
জমি দখল নেয়ার জন্য লতিফা বেগমকে বসতবাড়ি থেকে উচ্ছেদের হুমকি দেয় লাভলুর লোকজন। তখন বিষয়টি জানাজানি হয়ে যায়। এ অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে লতিফাসহ এলাকার আরও কয়েকটি পরিবার।
খতিয়ান পাল্টানোর বিষয়টি প্রকাশ পেলে রংপুর সেটেলমেন্ট অফিস থেকে পাটগ্রামের রসুলগঞ্জ কোটতলীর এস.এ. ৪০৪ নং খতিয়ানটি পুনরায় তোলা হয়। এতে দেখা যায় রাম দাস বাবু নামে কারও নাম খতিয়ানে নেই।
এরপর পাটগ্রাম থানায় আওয়ামী লীগ নেতা কাদের এলাহী লাভলুর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন লতিফা বেগম। কোন প্রতিকার না পেয়ে তিনি আদালতের আশ্রয় নেন।
লতিফার আইনজীবী মহিউদ্দিন লিমন বলেন, ’জেলা প্রশাসনের গোপনীয় শাখার মূল খতিয়ান থেকে মানুষের আমানত গায়েবের বিষয়টি দুঃখজনক। এ কারণে আমরা মামলা করেছি।‘
আওয়ামীলীগ নেতা কাদের এলাহী লাভলু বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে একটি মহল মিথ্যা প্রচার করছে। আমি কাগজ দেখে জমি কিনেছি।‘
আওয়ামী লীগের নাম ভাঙিয়ে কেউ কোনো পরিবারের ওপর অন্যায়-অত্যাচার করলে যথাযথ ব্যাবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পাটগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. রুহুল আমিন বাবুল।
লালমনিরহাট অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রাশেদুল ইসলাম প্রধান জানান, ৪০৪ নং খতিয়ান মুল ভলিয়ামে ছেড়া ও অন্য পাতা আঠা দিয়ে সংযুক্ত করা অবস্থায় পাওয়া গেছে। কী কারণে এটি হলো তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।