রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ মাহফুজা চৌধুরী হত্যা মামলায় দুই গৃহপরিচারিকা রেশমা আক্তার ওরফে রুমা ও রীতা আক্তার ওরফে স্বপ্নার মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছে আদালত।
রোববার ঢাকা মহানগর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক আবু জাফর মো. কামরুজ্জামান এ দণ্ডাদেশ দেন।
আদালত ঘরের মালামাল ও স্বর্ণ চুরির দায়ে দুই গৃহপরিচারিকাকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়। তবে হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখলে তাদের এ সাজা মওকুফ হবে।
২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি নিজ বাড়িতে খুন হন মাহফুজা চৌধুরী।
রায় শুনে মাহফুজাপুত্র ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক কর্মকর্তা সানিয়াত ইসমত অমিত, অমিতের স্ত্রী নাহরীন চৌধুরী, অমিতের খালু হামিদুল হক মুরাদ, খালা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা ইয়াসমিন চৌধুরী কাঁদতে থাকেন।
অন্যদিকে রায়ের পর তাৎক্ষণিকভাবে ভাবলেশহীন ছিলেন দণ্ডিতরা। কিছুক্ষণ পর তারা সজোরে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
দণ্ডিতদের আইনজীবী মতিউর রহমান মতি সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীরা রাষ্ট্রপক্ষে সাক্ষ্য দেননি। আমরা ন্যায়বিচার পাইনি। অবশ্যই উচ্চ আদালতে আমরা আপিল করব।’
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিশেষ পিপি আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘রায় সঠিক হয়েছে। উচ্চ আদালতে এ রায় বহাল থাকবে।’
রায়ে বিচারক বলেন, গৃহকর্মী রুমা ও স্বপ্নার মতো আর কেউ যেন ভুল পথে অগ্রসর হতে না পারে, সে জন্য বাসা-বাড়িতে গৃহকর্মী রাখার ক্ষেত্রে গৃহকর্তা বা গৃহকত্রীকে জরুরিভাবে সতর্ক হতে হবে।
রায়ের পযর্বেক্ষণে তিনি বলেন, হত্যাকাণ্ড নৃশংস ও চাঞ্চল্যকর। এ মামলার বাদী একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তার স্ত্রী অধ্যাপক মাহফুজা চৌধুরী নারী শিক্ষার অগ্রদূত।
রাজধানীর নিউমাকের্ট এলাকার সুকন্যা টাওয়ারের ডুপ্লেক্স বাসার দোতলায় থাকতেন মাহফুজা। নিচ তলায় রান্নাবান্না হতো। সেখানে থাকতেন আসামি রুমা, স্বপ্না ও সাক্ষী রাশেদা।
গত বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি মাহফুজাকে খুন করে জিনিসপত্র লুটের পরিকল্পনা করে আসামিরা। পরের দিন টাকা, সোনার অলঙ্কার ও মোবাইল ফোনসেট নিয়ে পালিয়ে যান তারা।
বিচারক কামরুজ্জামান বলেন, এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের শিকার যেন কেউ না হয়।
তিনি আরও বলেন, প্রচলিত আইন অত্যন্ত কঠোর। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিয়েই এ ধরনের হত্যাকাণ্ডের পুনরাবৃত্তি সম্ভব।